বিয়ে একটি পবিত্র ও হালাল সম্পর্ক। পবিত্র কুরআনে বিভিন্ন আয়াতে বিয়ে সম্পর্কে মহান আল্লাহ্ তায়ালা বর্ণনা করেছেন। এছারাও মহানবী (সা.) তার সাহাবীদের সময়মত বিবাহ করতে পরামর্শ দিতেন। ইসলামে, বিবাহ হল বিবাহযোগ্য দুইজন নারী ও পুরুষের মধ্যে দাম্পত্য সম্পর্ক প্রনয়নের বৈধ আইনি চুক্তি ও তার স্বীকারোক্তি। ইসলামে কনে তার নিজের ইচ্ছানুযায়ী বিয়েতে মত বা অমত দিতে পারে| একটি আনুষ্ঠানিক এবং দৃঢ় বৈবাহিক চুক্তিকে ইসলামে বিবাহ হিসেবে গণ্য করা হয়, যা বর ও কনের পারষ্পারিক অধিকার ও কর্তব্যের সীমারেখা নির্ধারণ করে। বিয়েতে অবশ্যই দুজন মুসলিম স্বাক্ষী (দু’জন পুরুষ অথবা একজন পুরুষ ও দু’জন মহিলা) উপস্থিত থাকতে হবে। ইসলামে বিয়ে হল একটি সুন্নাহ বা মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর আদর্শ এবং ইসলামে বিয়ে করার জন্য অত্যন্ত জোরালোভাবে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
বিয়ে সম্পর্কে কোরআনের আয়াত বা বাণী
কুরআনে বলা হয়েছে_
‘তিনি তোমাদের (স্বামী-স্ত্রী) একে অন্যের সাথী হিসেবে সৃষ্টি করেছেন এবং তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক ভালোবাসা ও দয়া প্রবিষ্ট করে দিয়েছেন।’
— সূরা রুম-২১
কুরআনে অন্যত্র বলা হয়েছে_
‘স্ত্রীরা হচ্ছে তোমাদের জন্য পোশাকস্বরূপ আর তোমরাও তাদের জন্য পোশাকস্বরূপ।’
— সূরা বাকারাহ-১৮৭
বিবাহের শর্ত সম্পর্কে কোরআনের আয়াত
কুরআনে বলা হয়েছে_
তোমাদের যে ব্যক্তির স্বাধীনা মু’মিন নারী বিবাহের ক্ষমতা না থাকে, সে যেন তোমাদের অধীনস্থ মু’মিনা দাসী বিবাহ করে এবং আল্লাহ বিশেষরূপে তোমাদের ঈমানকে জানেন। তোমাদের একজন অন্যজন থেকে উদ্ভূত, কাজেই তাদেরকে বিয়ে কর তাদের মালিকের অনুমতি নিয়ে, ন্যায়সঙ্গতভাবে তাদের মহর তাদেরকে দিয়ে দাও, তারা হবে সচ্চরিত্রা, ব্যভিচারিণী নয়, উপপতি গ্রহণকারিণীও নয়। বিবাহের দূর্গে সুরক্ষিত হওয়ার পর তারা যদি ব্যভিচার করে, তবে তাদের শাস্তি আজাদ নারীদের অর্ধেক; এ ব্যবস্থা তার জন্য তোমাদের যে ব্যক্তি (অবিবাহিত থাকার কারণে) ব্যভিচারের ভয় করে। ধৈর্য ধারণ করা তোমাদের পক্ষে উত্তম এবং আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
— সূরা নিসা-২৫
বিয়ে সম্পর্কে মুহাম্মাদ (সা.)- এর হাদীস
হাদীসে এসেছে যে, মুহাম্মাদ বলেছেন,
আবু হুরাইরা সূত্রে বর্ণিত, “যদি বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসা কোন মুসলিম যুবকের দ্বীন এবং ব্যবহার (চরিত্র) তোমাকে সন্তুষ্ট করে তাহলে তোমার অধীনস্থ নারীর সাথে তার বিয়ে দাও। এর অনথ্যায় হলে পৃথিবীতে ফিতনা ও দুর্নীতি ছড়িয়ে পড়বে।”
— (আল-তিরমিযি,)
“তোমাদের মাঝে যার কোন (পুত্র বা কন্যা)সন্তান জন্ম হয় সে যেন তার সুন্দর নাম রাখে এবং তাকে উত্তম আদব কায়দা শিক্ষা দেয়; যখন সে বালেগ অর্থাৎ সাবালক/সাবালিকা হয়, তখন যেন তার বিয়ে দেয়; যদি সে বালেগ হয় এবং তার বিয়ে না দেয় তাহলে, সে কোন পাপ করলে উক্ত পাপের দায়ভার তার পিতার উপর বর্তাবে”
যেসকল বিয়ে হারাম বা অবৈধ
বৈবাহিক চুক্তি এবং জোরপূর্বক/মতের অমতে বিয়ে
সম্পর্কিত হাদীস
আয়িশা (র) একবার নবীজী (স) কে প্রশ্ন করেছিলেন, একজন যুবতী নারীর ক্ষেত্রে যখন তাকে তার পিতা-মাতা বিবাহ দেয়, তার অনুমতি নেয়া উচিত কি? রাসূল (স) উত্তর দিলেন, হ্যাঁ, অবশ্যই তাকে(কনেকে) তার(নিজের) মতামত দিতে হবে; আয়িশা (র) আবার প্রশ্ন করলেন, কিন্তু একজন কুমারীতো লাজুক থাকে, হে আল্লাহর রাসূল? রাসূল (স) উত্তর দিলেন, তার নিরবতাই সম্মতি বলে বিবেচিত হবে;
— বুখারী, মুসলিম ও অন্যান্য
স্ত্রীর ভরণপোষণ এবং মোহর_
বিয়ে পড়ানোর পর শারীরিক সম্পর্কের আগে মোহরানার অর্থ পরিশোধ করতে হবে।
তথ্য সুত্রঃ উইকিপিডিয়া