মাইক্রোসফট এক্সেল কি?
মাইক্রোসফট এক্সেল হল একটি স্প্রেডশীট যা Microsoft কোম্পানি Windows , macOS , Android এবং iOS- এর জন্য তৈরি করেছে । এটিতে গণনা বা গণনার ক্ষমতা, গ্রাফিং টুলস, পিভট টেবিল এবং একটি ম্যাক্রো প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ রয়েছে যার নাম ভিজ্যুয়াল বেসিক ফর অ্যাপ্লিকেশন (VBA)। এক্সেল সফটওয়্যারের মাইক্রোসফট অফিস স্যুটের অংশ।
মাইক্রোসফট এক্সেল (Microsoft Excel) এ লেখার জায়গাকে অর্থাৎ কাজ করার জায়গাকে ওয়ার্কশীট বলা হয়। মাইক্রোসফট এক্সেল এর একটি ওয়ার্কশীটকে আমরা মাইক্রোসফট ওয়ার্ড এর একটি টেবিলের সাথে তুলনা করতে পারি। মাইক্রোসফট এক্সেল এর প্রত্যেকটি ওয়ার্কশীটে ১৬৩৮৪ টি কলাম এবং ১০৪৮৫৭৬ টি রো থাকে। আর কলাম ও রো এর সমন্বয়ে সৃষ্ট প্রতিটি ছোট ছোট ঘরকে সেল বলে। প্রত্যেকটি সেলে ডিফল্টভাবে কমপক্ষে ৮টি অক্ষর টাইপ করা যায় তবে অক্ষরের সাইজের উপর নির্ভর করে এ সংখ্যা কম-বেশী হতে পারে। স্বাভাবিক অবস্থায় এক্সেল (Excel) এ কার্সর দেখা যায় না, শুধুমাত্র টাইপ করার সময় কার্সর দেখা যায়। অন্যান্য সময় কার্সর যে সেলে থাকে সেই সেলটির পাশে বর্ডার দেখা যায়-একে সেল পয়েন্টার বলে। এছাড়া মাউস পয়েন্টারটি এক্সেলে + প্লাস চিহ্নের মত দেখায়।
মাইক্রোসফট এক্সেল কেনো শিখবেন?
বর্তমানে বাংলাদেশে যেকোনো অফিসিয়াল চাকরি করতে হলে আপনাকে সর্বপ্রথম কম্পিউটার বেসিক জানতে হবে অর্থাৎ (MS word, MS Excel, MS Power Point etc.) । এর মধ্যে আপনি যদি কোনো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে দুটি না জানলেই নয় মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ও মাইক্রোসফট এক্সেল। কোম্পানির ছোট ছোট হিসাবগুলো সাজিয়ে লেখার জন্য মাইক্রোসফট এক্সেল শেখা আবশ্যক।মাইক্রোসফট এক্সেল (Microsoft Excel) ব্যবহার করে চুড়ান্ত, নিখুঁত এবং নির্ভুল ফলাফল প্রদর্শন করা যায়। এছাড়া বিভিন্ন ইনপুটকৃত বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে দর্শনীয় চার্ট ও গ্রাফ তৈরি করাও সম্ভব এই সফটওয়ারে। ডাটা বা এর ফলাফলের নিরিখে প্রয়োজনীয় ছবি ব্যবহারের মাধ্যমে আপনার ডকুমেন্টের একটি চমকপ্রদ প্রেজেন্টেশনও তৈরি করতে পারবেন অনায়াসে।
বিভিন্ন ধরনের চার্ট তৈরি করার জন্য সারা বিশের কম্পিউটার ব্যবহারকারীরা মাইক্রোসফট এক্সেলের উপর নির্ভরশীল। কারণ একমাত্র মাইক্রোসফট এক্সেলের সাহায্যেই প্রবেশকৃত ডাটার ভিত্তিতে আপনি যে কোন ধররের নির্ভুল চার্ট তৈরি করতে পারেন।
সম্প্রতি গুগল সিট এ এই বৈশিষ্ট্য যোগ করা হয়েছে।
মাইক্রোসফট এক্সেল কিভাবে শিখবেন
মাইক্রোসফট এক্সেল এর কাজ খুব বেশি কঠিন নয়। এটি শিখতে আপনাকে বিশেষ কোনো মাধ্যম ব্যাবহারের প্রয়োজন নেই আপনাকে শুধু বেসিক কিছু জেনে নিয়মিত প্রাকটিস করতে হবে। বেসিক কাজ গুলো আপনি ইউটিউবে সহজেই পেয়ে যাবেন। মাইক্রোসফট এক্সেল (Microsoft Excel) সত্যিই অনেক কঠিন কাজকেও সহজ করে দেয়। আপনাকে প্রথমে ব্যবহারের জন্য নতুন প্রজেক্টটি কাস্টোমাইজ করা শিখতে হবে (যা আপনি নিজে নিজেই করতে পারবেন) এটা নির্ভর করে কোন ধরনের কাজে আপনি এটি ব্যবহার করবেন। যেমন ধরুন মার্কশিট, মূল্যতালিকা, নামের লিস্ট ইত্যাদি তৈরি করবেন। তারপর প্রত্যেকটি বক্সে ক্লিক করে সিলেক্ট করে সেখানে আপনি এডিট করতে পারবেন। মাইক্রোসফট এক্সেল এর একটি বিশেষ সুবিধা হলো ম্যাথমেটিক্স প্ল্যাগ। এর সাহায্যে যোগ-বিয়োগ অটোমেটিক ভাবে করে দেয়।
আপনাকে শুধু মাইক্রোসফট এক্সেল এর কিছু সূত্র মনে রাখতে হবে বাকি কাজ আপনি ইউটিউব দেখে খুব সহজেই করতে পারবেন।
মাইক্রোসফট এক্সেল শিখে কি করবেন
আগে জেনে নিন মাইক্রোসফট এক্সেল দিয়ে কি কি কাজ করা যায়। তার পর বলব মাইক্রোসফট এক্সেল শিখে কি করবেন বা আপনার কি কি লাভ।
- যেকোনো হিসাব বিবরণীর প্রতিবেদন তৈরি করতে পারবেন।
- অ্যাকাউন্টিং বা ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনায় যাবতীয় হিসাব সংরক্ষন ও ডেবিট- ক্রেটিটের পূর্ণ বিবরনীর তথ্যাদি সংরক্ষন ও বিশ্লেষণপূর্বক ফলাফল প্রদান করতে পারবেন।
- যে কোন প্রতিষ্ঠানের কর্মচারিদের বেতন, বোনাস সহ আয়-ব্যায়ের পূর্ণ বিবরণ সংরক্ষণ ও বিশ্লেশণ ভিত্তিক রির্পোট তৈরী করতে পারবেন
- ব্যবস্যা প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় আয়-ব্যয়ের হিসাব-নিকাশের পূর্ণ বিবরণী ডাটাবেজ ফাইল তৈরী করা সহ সব ধরনের পরিসংখ্যান হিসাব করতে পারবেন।
- সংখ্যাভিত্তিক যে কোন ধরনের ফরম্যাটের সূক্ষ হিসাব বিবরনের দাখিলা প্রস্তুত সহ উপস্থাপনের জন্য রিপোর্ট আকারের তৈরী করা বা সব ধরনের আর্থিক ব্যবস্থাপনা করা যায়।
- এছাড়া সংখ্যা ও ডাটাভিত্তিক যে কোন তথ্যে বিভিন্ন ধরনের Chart ও Graph তৈরি করা যায়।
চাকরি:
আপনি যদি চাকরি করতে চান। বর্তমানে চাকরির বাজারে কম্পিউটার বেসিক জ্ঞান ছাড়া চাকরি পাওয়া অসম্ভব প্রায়। বর্তমানে যদি এই পরিস্থিতি হয় তাহলে একবার ভেবে দেখুন ভবিষ্যতে কি অবস্থা সৃষ্টি হতে পারে। তাই চাকরি করতে চান কম্পিউটার বেসিক জ্ঞানসহ মাইক্রোসফট এক্সেল এর কাজ শিখুন বিভিন্ন হিসাব ব্যাবস্থাপনা চাকরির ক্ষেত্রে আপনি এগিয়ে থাকবেন।
ফ্রিল্যান্সিং:
ফ্রিল্যান্সিং জগতে যারা আছেন তারা নিশ্চয় জানেন। ডেটা এন্ট্রি নামে একটি কাজ আছে যেটি সম্পূর্ণ মাইক্রোসফট এক্সেল দিয়ে করতে হয়। এছাড়াও অনেক ছোট ছোট মার্কেটপ্লেস আছে যেখানে আপনি মাইক্রোসফট এক্সেল দিয়ে কাজ করে মাসে মোটামুটি হাত খরচের মত টাকা উপার্জন করতে পারবেন। তাই ফ্রিল্যান্সিং করতে চাইলে মাইক্রোসফট এক্সেল এর কাজ শিখুন।সবশেষে মাইক্রোসফট এক্সেল দিয়ে আপনি শুধু চাকরি আর ফ্রিল্যান্সিং করতে পারবেন এমন নয়। এটি দিয়ে আপনি আপনার ছোট বড় সকল হিসাব সহজেই করতে পারবেন। আপনি যদি পরিবার কেন্দ্রিক হয়ে থাকেন আপনার পরিবারের দৈনিক আয় ব্যয় হিসাব খুব সহজে গ্রাফ বা চার্ট আকারে তৈরি করতে পারবেন। মাইক্রোসফট এক্সেল সকলের কাছে জনপ্রিয় শুধু এর আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্যের জন্য।