পড়াশোনা নামটি যেমন সম্মান এনে দেয় তেমনি, এই কাজটি করাও অনেক কঠিন। পরিস্থিতি, আত্মবিশ্বাস ঠিক না থাকলে পড়াশোনা করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। তবে চিন্তার কোনো কারণ নেই আজকের এই পাঠে পড়াশোনায় মনোযোগ আনার উপায় সম্পর্কে আলোচনা করব। আমার মনে হয় শুধু বাঙালির না বরং প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীর একই সমস্যা পড়তে বসলে ঘুম চলে আসে, ক্ষুধা লাগে, মাথা ব্যাথা আরও কত কি! বাইরের সকল চিন্তা শুধু এই পড়াশোনা করার সময় মাথায় এসে হাজির হয়, আর পড়াশোনায় মনোযোগ যে কোথায় গায়েব হয়ে যায় কে জানে! পড়ায় মনোযোগ থাকলে যেটা একবার পড়লেই হয়, মনোযোগ না থাকলে সারাদিন পড়েও লাভ নেই। চলুন তাহলে জেনে নিই পড়াশোনায় মনোযোগ আনার ১০টি উপায় এবং সাথে কিছু উপদেশ।
পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার ৭টি উপায়
মনোযোগ আনা অত্যন্ত জটিল বিষয়, কোনো কাজে যেমন মনোযোগ না থাকলে কাজটি ভালো হয় না তেমনি; পড়াশোনায় মনোযোগ না থাকলে হাজার পড়লেও পড়া মনে থাকে না। চলুন মনে রাখার ট্রিক্স গুল জেনে নেই।
ধীর মনস্থির করুন
মনোযোগ হারাতে পারে এমন সব বিষয় মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলুন। আপনার পড়ার জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছু হাতের কাছেই রাখুন; যাতে বারবার উঠতে না হয়। পড়ার সময় হাতের কাছে মোবাইল না রাখার চেষ্টা করুন। খুব বেশি দরকার না হলে ফোন বন্ধ করে রাখতে পারেন। পড়তে বসার অন্তত ৫-১০ মিনিট আগ থেকে ধীর মনস্থির করুন।
টিউশনি বা শিক্ষকতা
টিউশনি বা শিক্ষকতা নিজের জ্ঞান আহরণের জন্য সবচেয়ে উত্তম উপায় বলে আমি মনে করি। আপনি যখন একটি বিষয় কাউকে দেখবেন, দেখবেন সেই বিষয়গুলো আপনার কাছে খুবই সহজ হচ্ছে। এর করুন প্রতিনিয়ত চর্চা হয়। যেমন- আপনি যদি ইংরেজি কম বোঝেন বা ইংরেজী নিয়ে পড়তে চান ভবিষ্যতে আপনার উচিত এখন থেকেই ইংরেজির উপর শিক্ষা দান করা অন্যদের। এতে আপনার নিজেরও চর্চা থাকবে বিষয়টির উপর।
নতুন ধারণা ও পরিচিত ধারণার মাঝে সংযোগ
একটু আগেই বলেছি একটি অন্যটির সাথে সংযোগ তৈরি করতে শিখুন। আপনি যখন নতুন কোন বিষয় বা তথ্য সম্পর্কে জানবেন তা আপনার বর্তমানের পরিচিত কোন জানা তথ্য বা ধারণার সাথে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করুন। এতে পরীক্ষার সময় আপনার সে নতুন তথ্য ভুলে যাবার আশঙ্কা কমে যায় আর আপনার পড়তেও অনেক সুবিধা হবে।
তথ্যের ধরন
পড়ার সময় প্রত্যেকটি তথ্যে বোঝার চেষ্টা করুন। যেমন: যে তথ্য দেয়া আছে সেটা কি ঐতিহাসিক তথ্য, বিজ্ঞানের কোন তথ্য, নাকি কোন ব্যক্তি বা দেশ সম্পর্কে তথ্য এসব বিষয়ে ভালো করে বুঝে পড়ুন, পড়া মুখস্থ করার চেষ্টা না করে আপনি কিভাবে বুঝেন সেইভাবে বোঝার চেষ্টা করুন। যদি মুখস্থ করতে চান তাহলে বুঝে মুখস্থ করুন না বুঝে মুখস্ত করলে তা কোনদিন মনে থাকবেনা।
মস্তিষ্কের উপর চাপ না দেয়া
এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন পড়তে মন না বসলে জোর করে পড়তে যাবেন না। কথায় আছে না! ” জোর করে ভালোবাসা পাওয়া যায় না ” ঠিক সেভাবেই জোর করে পড়তে গেলে পরে হিতে বিপরীতও হতে পারে। পড়া শুরু করার আগে নিজের পড়াশোনা নিয়ে একটু চিন্তা করুন তাহলে দেখবেন পড়ার প্রতি মনোযোগ বৃদ্ধি পাবে। একসাথে বেশি পড়লে মাথায় চাপ পড়বে তাই অল্প অল্প পড়ার মাঝে থাকবেন। এতে করে আপনার উপর কোন মানসিক চাপও থাকবেনা আর আপনি পরীক্ষার আগে একটু রিভিশন দিলেই আপনার হয়ে যাবে।
বোর্ড বইয়ের সাথে পছন্দের বই
শুধু বোর্ড বই পড়লে একঘেয়েমি চলে আসবে, তাই বোর্ড বইয়ের পাশাপাশি আপনার পছন্দের গল্পের বই বা অন্য যেকোনো বই পড়ুন তাহলে দেখবেন পড়াশোনার প্রতি মনোযোগ বেড়ে যাবে। পড়াশোনায় মনোযোগ আনার উপায় হিসেবে এই পদ্ধতি খুবই কার্যকরী একবার চেষ্টা করুন। সব সময় পুস্তকি বিদ্যার সাথে সম্পৃক্ত করলে হবেনা। দেশ ও দেশের বাইরের অনেক লেখকের বই পড়ার অভ্যাস সব সময় রাখতে হবে। এটি যেমন জ্ঞান বৃদ্ধি করবে তেমনি আত্মবিশ্বাসী হতে সাহায্য করবে তাই, আমি উপদেশ হিসাবে পছন্দের বই পড়তে বলব।
পড়ার নোট তৈরি
পড়ার পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ন বিষয়গুলো নোট করে অন্য একটি খাতায় লিখে রাখুন, এতে আপনার চর্চা করার পাশাপশি পড়ে অনেক সময় বেচেঁ যাবে এবং নিজের উপর আত্মবিশ্বাস বেড়ে যাবে। আত্মবিশ্বাস বেড়ে গেলে পড়াশোনায় মনোযোগ বেড়ে যাবে এটাই স্বাভাবিক।