অ্যাপেন্ডিসাইটিস কি ?
অ্যাপেন্ডিসাইটিস পরিপাকতন্ত্রে বিহদান্ত্রের সিকামের সাথে ঝুলন্ত তিন-চার ইঞ্চি কেচ বা কৃমির মত একটি অঙ্গ হচ্ছে ভার্মিফর্ম বা অ্যাপেন্ডিক্স। আর এই এপেন্ডিক্স এর সংক্রমণ বা প্রদাহ কেই অ্যাপেন্ডিসাইটিস বলে।
অ্যাপেন্ডিসাইটিস হলো ভার্মিফর্ম অ্যাপেন্ডিক্সের প্রদাহ যার সাধারণ লক্ষণ সমূহ তলপেটের ডানদিকে ব্যথা করা জ্বর, বমি ইত্যাদি। অ্যাপেন্ডিক্স এর গোহুর বা লোমের কারণে বন্ধ হলে অ্যাপেন্ডিসাইটিস হয়। মল দিয়ে তৈরী ক্যালসিফাইড পাথর টিউমার, পিত্তাশয় পাথর, পরজীবী ইত্যাদি লোম বন্ধ করে দিতে যার কারণে অ্যাপেন্ডিক্স এর টিস্যুতে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে ফলে ফেটে গিয়ে ব্যাক্টেরিয়া সারা পেতে সরিয়ে পরে যার জন্যে অনেক ব্যথা অনুভব হবে। অ্যাপেন্ডিক্স ফেটে গেলে পুরো পেট সংক্রমণে ছড়িয়ে পড়ে যার ফলে পেরিনটিয়ামের প্রদাহ হয় এবং সেপসিস হতে পারে।
তাই আমাদের এই রোগের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসা সেবা নিবো।
অ্যাপেন্ডিসাইটিস রোগীর লক্ষণ সমূহ:-
অ্যাপেন্ডিসাইটিস রোগীর মূল লক্ষণ সমূহ হলো তলপেটের ডান দিকে ব্যথা করা, জ্বর, বমি ইত্যাদি। সাধারণ ৪০% রোগীর ক্ষেত্রে এই লক্ষন দেখা যায় না। তবে কিছু লক্ষণ দেখা দিলে আমরা ডাক্তারের কাছে যাবো। রোগের লক্ষণ ও শারীরিক পরীক্ষার মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করা না গেলে, সিটিস্ক্যান আলট্রাসনোগ্রাম ইত্যাদির মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করা সম্ভব।
অ্যাপেন্ডিসাইটিস একটি খুবই জটিল রোগ তাই এর কিছু লক্ষন দেখা দিলে অবশ্যই আমরা যথাযত ব্যবস্থা নিবো।
অ্যাপেন্ডিসাইটিস কেনো হয়:-
অ্যাপেন্ডিক্স এ সাধারণত জীবাণু ঘটিত কারণে অ্যাপেন্ডিসাইটিস হয়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা না থাকলে অ্যাপেন্ডিসাইটিস এর সংক্রমণ হতে পারে। কম তন্ত্র বা আঁশ জাতীয় খাবার যেমন, শাক সবজি কম খাওয়া, অস্বাস্থ্যকর খাবার এবং কম আঁশ জাতীয় খাবার খেলে দেখা যায় কুষ্ট কণিকা বা শক্ত পায়খানা এবং এই সমস্যার কারণে অ্যাপেন্ডিক্স এর মুখ বন্ধ হয়ে যায় এবং ভেতরের নিঃসরণ নির্গমনে বাধা দেই ফলে এপেন্ডিক্স এর প্রদাহ দেখা দেয়। তাই আমাদের অবশ্যই আঁশ যুক্ত খাবার খেতে হবে।
অ্যাপেন্ডিসাইটিস রোগের চিকিৎসা:-
অ্যাপেন্ডিসাইটিস রোগের মূল চিকিৎসা হলো জরুরি অন্ত্রপ্রচারের মাধ্যমে সংক্রমণ এবং প্রদাহ আক্রান্ত থেকে অ্যাপেনডিকসের অপসারণ । অ্যাপেন্ডিসাইটিস এর লক্ষণ দেখা গেলে রোগীকে কিছু খেতে দেওয়া যাবে না এমনকি কোনো প্রকার ওষুধ সেবন করতে দেওয়া যাবে না চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। সাধারণভাবে সুস্থ না হলে Laparoscopy মাধ্যমে যত জটিল হোক না কেনো রোগ নির্ণয় করা যায়।
সহজকথায় অ্যাপেন্ডিসাইটিস এর লক্ষণ দেখা দিলে অবশ্যই প্রাথমিক ভাবে হাসপাতাল নিয়ে যেতে হবে এবং ভালো ডাক্তারের কাছে পরামর্শ নিয়ে ভালো চিকিৎসা নিতে হবে
অ্যাপেন্ডিসাইটিস এর প্রতিকার প্রতিরোধ:-
অ্যাপেন্ডিসাইটিস মূলত হয়ে থাকে কম আঁশ যুক্ত খাবার খেলে। আমরা আমাদের প্রতিদিনের খাবার তালিকায় আঁশযুক্ত খাবার রাখবো। অস্বাস্থ্যকর খাবার কিছুতেই রাখা যাবে না। অ্যাপেন্ডিসাইটিস একটি জটিল রোগ আমরা চাই সবাই এই রোগ থেকে বাঁচে তাই বাঁচতে হলে আমাদের অবশ্যই করণীয় হলো অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিহার করে পুষ্টি যুক্ত খাবার এবং আঁশযুক্ত খাবার খেতে হবে।
সুতরাং অ্যাপেন্ডিসাইটিস একটি জটিলতম রোগ তাই এই রোগের লক্ষণ দেখা দিলে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। আমাদের এই রোগ থেকে রক্ষা পেতে হলে আঁশযুক্ত খাবার খেতে হবে। উন্নত বিশ্বে যেখানে প্রচুর পরিমাণে ঠান্ডা সেখানে অনেক আগে থেকেই অ্যাপেন্ডিক্স অস্ত্রোপচার করে কেটে ফেলা হয় কারণ অতিরিক্ত ঠান্ডায় অ্যাপেন্ডিক্স ফেটে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে।