Search
Close this search box.

আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী তুমি বাবা

images (3)

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক লাইভে কষ্টের কথা জানিয়ে রহিমা আক্তার (২৪) নামে এক গৃহবধূ গলায় ফাঁস দিয়েছে।

 (১৮ জুন) ভোরে রাজশাহীর চারঘাট পৌর শহরের হলের মোড় এলাকার একটি ভাড়াবাড়িতে তিনি গলায় ফাঁস দেন।

পুলিশ জানায়, আত্মহত্যা করার আগে রেমি ২৩ মিনিট, ১২ মিনিট ও ৫ মিনিট সময়কালের ৩টি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেন।

২৩ মিনিটের ভিডিওতে রেমি বলেন, ‘কথা হইলো আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী কারা। প্রথমেই আমার বাবা ও ছোট (সৎ) মাকে বলি আমার প্রিয় মানুষটাকে (স্বামী) জেল, আইন-আদালতের পেছনে ঘুরাবা না। কারণ আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী তুমি (বাবা)। আজ যদি তুমি বিয়ে না করতে, আমার মাকে নিয়ে সংসার করতে তাহলে আমাকে নিয়ে এসব কথা বলার সাহস পেত না। জেল যদি কাউকে খাটতে হয় সে তোমার (বাবা)। সেটা একমাত্র তোমার। আর কারো না।

আরও বলেন, ‘আমার হাজবেন্ডকে বলছি, তোমার নামে যদি কেউ এলিগেশন দেয় যে, তোমার মানসিক টর্চারে আমি মারা গেছি- তুমি তার নামে মামলা দিবা। ওর নামে দিবা মামলা, কারণ আমার বাবা-মা ভালো হইলে কেউ সাহস পাইতো।’

১২ মিনিট সময়কালের ভিডিওতে রেমি বলেন, ‘আমি একটি বই লিখতে শুরু করেছিলাম। বইয়ের নাম রাখতে চেয়েছিলাম সুইসাইড। বই লেখা শেষ না করতেই আমি নিজেই সুইসাইড হয়ে গেলাম। বাবা-মা খারাপ হলে কিন্তু সন্তানরা খারাপ হয় না। এসব কথা শুনতে শুনতে বোর হয়ে গেছি। জীবন দিয়ে প্রমাণ করে দিতে চাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার কপালের টিপটা খুব বেমানান লাগে। আজ পাথর হয়ে গেছি। এ সময় ডাক্তারের একটি চিকিৎসা পত্র দেখে তিনি বলেন, ‘এ ডাক্তারের কাছে আমার চিকিৎসা চলে। আমি থেরাপি নিচ্ছি। এক বছরের বেশি সময় ধরে থেরাপি নিচ্ছি। তবে থেরাপি নিয়ে খুব একটা কাজ হয়নি। ডাক্তারের থেকে থেরাপি নিয়ে যেটা বুঝতে পেরেছি, যে মানুষের ব্যবহারটাই সব থেকে বড় থেরাপি।’

আরও পড়ুন  নিয়োগ দেবে সিটি ব্যাংক, অভিজ্ঞতা ছাড়া

স্বামীর উদ্দেশ্যে রেমি বলেন, ‘তুমি সন্তানের বাবা-মায়ের দায়িত্ব পালন করবে। আমি তোমাদের দুজনকে খুব ভালোবাসি। তোমার যখন চাকরি ছিল না, বেকার ছিলে, তখন আমি তোমাকে ছেড়ে যাইনি। এখন তোমার চাকরি হয়েছে। যে নতুন জীবনসঙ্গী হবে তাকে সময় দিও।’

নিহত গৃহবধূর নাম রহিমা আক্তার। তার স্বামীর নাম সায়েম ইসলাম ওরফে সাগর। তিনি একটি ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করেন। তারা পুঠিয়া উপজেলার স্থায়ী বাসিন্দা। চারঘাট পৌর এলাকার ওই বাসায় তারা ভাড়া থাকতেন। ‘আত্মহত্যা’র সময় তিনি বাড়িতে একাই ছিলেন। ঈদের দিন বাবার বাড়ি ও শ্বশুরবাড়িতে স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে গিয়েছিলেন। ভালো লাগছিল না বলে তিনি ভাড়া বাড়িতে চলে আসেন এবং ভোররাতে ‘আত্মহত্যা’ করেন। 

এ বিষয়ে চারঘাট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিদ্দিকুর রহমান বলেন, রহিমার বাবার সঙ্গে তার মায়ের ছাড়াছাড়ি হয়ে গিয়েছে। পরে রহিমার বাবা আরেকটি বিয়ে করেন। এতে রহিমা একা হয়ে যায়। এ নিয়ে বিষণ্নতায় আগেও বেশ কয়েকবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। ভোরে লাইভ শেষে গলায় ফাঁস দিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেন। সকালে পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের মর্গে নেওয়া হয়। সেখানে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

আরো পড়ুন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top