সুনামগঞ্জ সিলেট বিভাগের অন্তর্গত বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত একটি জেলা। সুনামগঞ্জ জেলা ১২টি উপ-জেলা নিয়ে গঠিত। এই জেলার বিখ্যাত ব্যাক্তি হলেন শাহ আব্দুল করিম, আলাউর রহমান, হাসন রাজা এবং কাকন বিবি। এছাড়াও সুনামগঞ্জ জেলার দর্শনীয় স্থানের তালিকা দেখুন:
সুনামগঞ্জ জেলার দর্শনীয় স্থান:
- হাসান রাজার সমাধি
- হাসান কিং মিউজিয়াম
- গৌরারং জমিদারবাড়ি
- পাগল মসজিদ
- যাদুকাটা নদী
- সুখাইর জমিদারবাড়ি
- টাঙ্গুয়ার হাওর
- বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের সমাধি
- ঢাল মেলা
সুনামগঞ্জ জেলার ঐতিহাসিক নিদর্শন সমূহ
হাসান রাজার সমাধি
সুনামগঞ্জ শহরের তেঘরিয়া এলাকায় হাসান রাজার সমাধি তিনি একজন মরমী কবি। তার আসল নাম দেওয়ান রাজা চৌধুরী। তিনি ১৮৫৪ সালে সুনামগঞ্জের লক্ষ্মণশ্রী গ্রামের এক জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম দেওয়ান আলী রাজা চৌধুরী। ১৯২২ সালে তার মৃত্যুর পর তাকে এখানে সমাহিত করা হয়।
হাসান কিং মিউজিয়াম
সুনামগঞ্জের সুরমার তীরে রাজার বাড়িটি এখন জাদুঘরে পরিণত হয়েছে। জাদুঘরে রয়েছে কবির ব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিসপত্র, কবিদের হাতে লেখা কবিতা ও গানের পাণ্ডুলিপি।
গৌরারং জমিদারবাড়ি
সুনামগঞ্জের সদর উপজেলায় রয়েছে পাঁচশ বছরের পুরনো গৌরারং জমিদার বাড়ি। বাড়ির বিভিন্ন স্থাপনার নির্মাণশৈলী বেশ আকর্ষণীয়। তবে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে প্রাচীন স্থাপনাটি দিন দিন তার জাঁকজমক হারাচ্ছে। শহরের সাহেববাড়ি ঘাট থেকে নৌকা বা ট্রলারে যেতে হয় টুকের ঘাট, সেখান থেকে রিকশায় করে জমিদারবাড়ি।
পাগল মসজিদ
প্রাচীন মসজিদটি সদর উপজেলার পাগলা ইউনিয়নের পাগলা বাজারের কাছে অবস্থিত। দোতলা মসজিদটির চার কোণায় তিনটি সুসজ্জিত গম্বুজ এবং চারটি ছোট মিনার রয়েছে। সুনামগঞ্জ সদর থেকে বাসে যাওয়া যায়।
যাদুকাটা নদী
জাদুকাটা নদী জেলার তাহিরপুর উপজেলায় অবস্থিত। কথিত আছে একজন ধর্মপ্রাণ হিন্দু অদ্বৈত মহাপ্রভুর মা লাভা দেবীর গঙ্গা স্নানের প্রবল ইচ্ছা ছিল। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারণে তার ইচ্ছা পূরণ হয়নি। অদ্বৈত মহাপ্রভু মায়ের বাসনা পূরণের উপায় হিসাবে পৃথিবীর সমস্ত তীর্থস্থানের পবিত্র জলকে এক স্রোতে এক স্রোতে প্রবাহিত করেছিলেন। এই স্রোতটিই পুরনো রেণুকা নদী যা এখন যাদুকাটা নদী নামে পরিচিত। এই নদীর তীরে তাহিরপুরে প্রতি বছর চৈত্র মাসে বারুণী মেলা বসে।
টাঙ্গুয়ার হাওর
সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা ও তাহিরপুর উপজেলার দশটি মৌজা নিয়ে টাঙ্গুয়ার হাওর। প্রায় ১০০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই হাওরে ছোট-বড় ১২০টি বিল রয়েছে। এই হাওরে প্রতি বছর প্রায় ২০০ প্রজাতির অতিথি পাখির সমাগম ঘটে। হাওরে প্রায় ২০৭ প্রজাতির পাখি, ১৫০ প্রজাতির জলজ উদ্ভিদ, ১৫০ প্রজাতির মাছ, ৩৪ প্রজাতির সরীসৃপ এবং ১১ প্রজাতির উভচর প্রাণী রয়েছে। জেলা শহর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত হাওরে শহরের তেঘরিয়া বা সাহেববাড়ি ঘাট থেকে ইঞ্জিনের নৌকা ভাড়া করতে হয়।
সুখাইর জমিদারবাড়ি
জেলার ধর্মপাশা উপজেলার সুখাইর জমিদারবাড়ি। প্রায় ২৫ একর জমির এই প্রাচীন বাড়িটি এখন ধ্বংসের পথে। ১৯২২-২৩ সালে সুখাইর এই জমিদার বাড়ি থেকে বিভিন্ন বিদ্রোহ শুরু হয়।
বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের সমাধি
জেলার দিরাই উপজেলার ধল গ্রামে বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের মাজার। তিনি ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯১৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন। বাউল সম্রাট ১২ সেপ্টেম্বর ২০০৯ সালে মারা যান এবং এখানে সমাহিত করা হয়।
ঢাল মেলা
দিরাই থানার ধল গ্রামে প্রতি বছর ফাল্গুন মাসের প্রথম বুধবার থেকে শুরু হয় ঐতিহ্যবাহী ঢল মেলা। মেলায় নানা ধরনের লোকগানের আয়োজন করা হয়।