পাসপোর্ট রিনিউ করা অনেকেই ঝামেলার মনে করেন; অনেকেই আবার পাসপোর্ট রিনিউ করার নিয়ম জানেন বা। তাই আজকে আপনাদের জানাবো কিভাবে খুব সহজেই আপনার পাসপোর্ট রিনিউ করবেন। পাসপোর্ট রিনিউ করতে আমাদের কিছু কাগজপত্র লাগবে, সেগুলো থাকলে অনলাইনে আবেদন করে রিনিউ করা যাবে।
পাসপোর্ট রিনিউ করার নিয়ম
আসলে নতুন পাসপোর্ট এর আবেদন করা ও রিনিউ আবেদন করার প্রসেস প্রায় একই। শুধু অল্প কিছু পার্থক্য আছে। সংক্ষেপে পাসপোর্ট রিনিউ বা রি-ইস্যু করার নিয়ম বা ধাপ এগুলো। এই লিস্ট দেখলেই হয়ত বুঝে যাবেন কি করতে হবে।
পাসপোর্ট রিনিউ করতে যা যা লাগবে
ধাপ১: প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করা
পাসপোর্ট রিনিউ করতে যেসব কাগজপত্র লাগে তা সব নতুন পাসপোর্ট করার মতই। তবে যেহেতু রিনিউ আবেদনকারীদের আগের একটা পাসপোর্ট আছে তাই অনেক পাসপোর্ট অফিসে কাগজের কিছু শিথিলতা থাকে। সবচেয়ে বেস্ট হল আপনি যে পাসপোর্ট অফিসে আবেদন করবেন সে অফিসে কেউ রিনিউ আবেদন করে থাকলে তার খোজ নেয়া। যাইহোক চলুন দেখে নেই পাসপোর্ট রিনিউ করতে কি কি লাগে!
(১) জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ (নিম্নোক্ত বয়স অনুযায়ী)
- ১৮ বছরের নিচে হলে অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ
- ১৮-২০ বছর হলে জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ।
- ২০ বছরের বেশি হলে জাতীয় পরিচয়পত্র আবশ্যক।
- পেশাগত প্রমাণ (যেমন ছাত্র হলে স্টুডেন্ট আইডি, জব হোল্ডার হলে জব আইডী, ব্যবসায়ী হলে ট্রেড লাইসেন্স, কৃষক হলে জমির খতিয়ান এসব)
- ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, ড্রাইভার, উকিল ও অন্যান্য পেশার লোকদের ক্ষেত্রে পেশাগত সনদ।
- সরকারী চাকুরীজীবীদের জন্য NOC বা Government Order-সরকারি আদেশ।
(২) নাগরিক সনদপত্রপাসপোর্টে স্বামী বা স্ত্রীর নাম নতুন যুক্ত করলে কাবিননামা (কম বয়সীদের ক্ষেত্রে আবশ্যিক)
আগে কোন পাসপোর্ট থেকে থাকলে সেগুলোর মুল কপি ও ডাটা পেইজের ফটোকপি।
(৩) ১৮ বছরের নিচের আবেদনকারীদের জন্য তাদের পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয়পত্র (NID)
১৫ বছরের নিচের আবেদনকারীদের পিতা-মাতার পাসপোর্ট সাইজ ছবি অথবা বৈধ অভিভাবকের পাসপোর্ট সাইজ ছবি দিতে হবে।
(৪) ৬ বছরের নিচের আবেদনকারীদের ক্ষেত্রে পাসপোর্ট সাইজ ছবি ও 3R সাইজের (সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড) ম্যাট পেপারে ল্যাব প্রিন্ট রঙ্গিন ছবি দিতে হবে।
এছাড়া ঢাকার পাসপোর্ট অফিসগুলোতে বর্তমান ঠিকানা প্রমাণের জন্য ইউটিলিটি বিল, ভাড়াটিয়া চুক্তিপত্র এসব লাগতে পারে। আপনার পেশা ও যে অফিসে আবেদন করবেন সেটা অনুযায়ী আপনার ডকুমেন্টস রেডী করুন।
ধাপ ২: পাসপোর্ট রিনিউ করার ফরম পূরণ করা
পাসপোর্ট রি-ইস্যু করতে কি কি কাগজ লাগবে তা তো জানা হল। এখন পাসপোর্ট রি-ইস্যু ফরম পুরন করতে হবে অনলাইনে। পাসপোর্ট ফরম পুরন করার জন্য প্রথমেই এই লিংকে গিয়ে আপনার বর্তমান ঠিকানার জেলা ও পুলিশ স্টেশন সিলেক্ট করে ইমেইল ও ফোন নাম্বার দিয়ে রেজিস্টেশন করে নিন। এরপর ধাপে ধাপে খুব সতর্কতার সাথে আবেদন ফরম পুরন করুন।
ধাপ ৩: পাসপোর্ট রিনিউ ফি ও আবেদনের ধরন
পাসপোর্ট রিনিউ করার কথা মাথায়লেই আমাদের মনে প্রথম প্রশ্ন আসে যে পাসপোর্ট রিনিউ ফি কত? নতুন পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন এর ফি আর পাসপোর্ট রিনিউ ফি, রি-ইস্যু ফি একই! আবেদনের ধরন ও পাসপোর্ট এর পৃষ্ঠা সংখ্যার উপর ভিত্তি করে পাসপোর্ট রিনিউ ফি বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। রিনিউ করার পূর্বে পাসপোর্ট অফিসে বা ওয়েবসাইটে দেখে নিবেন।
ধাপ ৩: আবেদন পত্র অফিসে জমা দেওয়া
সব কিছু ঠিক থাকলে তারা আপনার আবেদন জমা নিবে এবং বায়োমেট্রিক এনরোলমেন্ট সম্পন্ন করার জন্য কোন রুমে যেতে হবে সেটা বলে দিবে। রুম নাম্বার অনুযারি পাঠানো রুমে গিয়ে আপনার আঙ্গুলের ছাপ দিন, ছবি তুলুন, চোখের স্ক্যান এবং সিগনেচার দিয়ে একটা রশীদ দিবে সেটা নিয়ে ভালো করে দেখুন কোন ইনফরমেশনে ভূল আছে কি না। এই রশীদে যে ইনফরমেশন দেখাবে তা আপনার পাসপোর্টে হুবুহু সেইম ই প্রিন্ট হবে। তাই কিছু ভূল দেখতে পেলে সাথে সাথে দ্বায়ীত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তাকে জানান। নাহলে পাসপোর্ট প্রিন্ট হয়ে গেলে আর সংশোধন করতে পারবেন না।
ধাপ ৫: পুলিশ ভেরিফিকেশন
পাসপোর্ট রি-ইস্যু বা রিনিউ আবেদনে সাধারণত পুলিশ ভেরিফিকেশন হয় না। তবে পুলিশ ভেরিফিকেশন হতে পারে নিম্নোক্ত ক্ষেত্রে।
- যদি আপনি স্থায়ী ঠিকানা পরিবর্তন করেন
- এছাড়া আপনি যদি কোন বিশেষ পরিবর্তন করেন তাহলেও পাসপোর্ট অফিস চাইলে পুলিশ ভেরিফিকেশন চাইতে পারে।
সমস্ত কাজ সম্পন্ন হলে কিছুদিন পর আপনার পাসপোর্ট রিনিউ সম্পন্ন হলে, আপনাকে জানানো হবে। আপনি সেখান থেকে সংগ্রহ করে নিবেন।
1 thought on “পাসপোর্ট রিনিউ করার সঠিক নিয়ম জেনে নিন”
Pingback: অনলাইনে ই-পাসপোর্ট রিনিউ করার নিয়মাবলী-Passport Renewal Process – নিউজরুমস২৪