Search
Close this search box.

পঞ্চগড় জেলার সবচেয়ে আকর্ষণীয় ১০টি পর্যটন স্থান

Panchagarh

পঞ্চগড় বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের রংপুর বিভাগের একটি জেলা। এটি ১ ফেব্রূয়ারী ১৯৮৪ সালে একটি জেলা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। পঞ্চগড়কে পরিহাস শব্দ হিসেবে পচাগড় ও বলা হয়। জেলার নামের সাথে দুটি প্রধান বিশ্বাস জড়িত। প্রথমটি হল, পুন্ড্র নগর রাজ্যের পঞ্চনগরী নামক একটি এলাকার নামানুসারে পঞ্চগড়ের নামকরণ করা হয়েছে।

দ্বিতীয়টি হল এই অঞ্চলের পাঁচটি দুর্গের জন্য এর নামকরণ করা হয়েছিল। দুর্গগুলি হল ভিতরগড়, হোসাইনগড়, মীরগড়, রাজনগড় এবং দেবেনগড়, তাই নাম পঞ্চগড়, যার অর্থ ‘পাঁচটি দুর্গ’। ব্রিটিশ রাজত্বের সময়, পঞ্চগড় অবিভক্ত বাংলার জলপাইগুড়ি জেলার অন্তর্গত ছিল। ১৯১১ সালে জলপাইগুড়ি একটি থানা হিসাবে সম্পূর্ণরূপে প্রতিষ্ঠিত হয়। সে সময় জলপাইগুড়ি থানার সদর দপ্তর ছিল বর্তমান পঞ্চগড় জেলার জগদল উপজেলায়। পরিবেশগত এবং পরিবহন সুবিধার জন্য থানাটিকে তার বর্তমান অবস্থানে করতোয়া নদীর তীরে স্থানান্তর করা হয়েছিল। ১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান বিভক্তির পর পঞ্চগড় ছিল ঠাকুরগাঁও মহাকুমার অধীনস্থ একটি থানা।

পঞ্চগড় জেলার পর্যটন স্পট:

পঞ্চগড় জেলার দর্শনীয় স্থানগুলো হলঃ

  • মহারাজার দিঘী
  • বদেশ্বরী মহাপীঠ মন্দির
  • মির্জাপুর শাহী মসজিদ
  • গোলোক ধাম মন্দির
  • বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট ও স্থলবন্দর
  • তেতুলিয়ার ডাক বাংলো
  • রকস মিউজিয়াম
  • তেতুলিয়া চা বাগান
  • তেতুলিয়া পিকনিক স্পট
  • বারো আউলিয়ার মাজার

পঞ্চগড় জেলার ১০ দর্শনীয় স্থান:

১. রকস মিউজিয়াম

পঞ্চগড় করতোয়া নদীর তীরে ছোট্ট ও সুন্দর একটি শহর। শহরের মহিলা কলেজের ক্যাম্পাসে রকস মিউজিয়াম স্থাপন করা হয়েছে। কলেজের অধ্যক্ষ নাজমুল হক ১৯৯৭ সালে এই জাদুঘরটি প্রতিষ্ঠা করেন। এখানে খোলা এবং অভ্যন্তরীণ নামে দুটি গ্যালারিতে আপনি পাবেন দুর্লভ সব পাথর। এছাড়া একটু সময় নিয়ে ছোট শহরে ঘুরে আসতে পারেন।

২. মির্জাপুর শাহী মসজিদ

জেলার আটোয়ারী উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নে অবস্থিত তিনটি গম্বুজ বিশিষ্ট একটি প্রাচীন মসজিদ। প্রায় চল্লিশ ফুট লম্বা ও পঁচিশ ফুট চওড়া মসজিদের দেয়াল ফুল ও পাতায় পোড়ামাটির ফলক দিয়ে ভরা। মসজিদের প্রধান প্রবেশদ্বারের পৃষ্ঠে ফারসি ভাষায় একটি শিলালিপিতে বলা হয়েছে যে মসজিদটি ১৮৯ সালে দোস্ত মোহাম্মদ নামে এক ব্যক্তি তৈরি করেছিলেন।

আরও পড়ুন  সুনামগঞ্জ জেলার ঐতিহাসিক নিদর্শন সমূহ 

৩. গোলোক ধাম মন্দির

জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার শালডাঙ্গা ইউনিয়নে এই মন্দিরটি অবস্থিত। এটি ১৮৪৮ সালে নির্মিত হয়েছিল। মন্দিরটি গ্রীক স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত। এটি দেখতে অনেক আকর্ষণীয় তবে বর্তমানে যত্নের অভাব প্রায় ধ্বংসের মুখে পড়েছে।

৪. তেতুলিয়া পিকনিক স্পট

পঞ্চগড় শহর থেকে সরাসরি যেতে পারেন বাংলাদেশের সর্বদক্ষিণের উপজেলা তেঁতুলিয়ায়। তেঁতুলিয়া জেলা পরিষদের বাংলো মহানন্দা নদীর তীরে অবস্থিত। বাংলোর পাশেই আছে সুন্দর পিকনিক স্পট। নদীর ওপারে ভারত। আপনি এই আকর্ষণীয় জায়গায় কিছু সময় কাটাতে পারেন। এখান থেকে হিমালয়ের কাঞ্চনজঙ্ঘার অপূর্ব দৃশ্য দেখা যায়।

৫. তেতুলিয়া চা বাগান

তেঁতুলিয়ায় বেশ কয়েকটি চা বাগান রয়েছে। তেঁতুলিয়া থেকে পঞ্চগড় ফেরার পথে রাস্তার দুই পাশে রয়েছে চা বাগান। ডানদিকের বাগানগুলো মূলত ভারতীয়। তাই তাদের ঢোকার সুযোগ নেই। ফেরার পথে হাতের বাম পাশে শালবাহান রোড ধরে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে ময়নাগুন্ডি টি এস্টেট। এই ছোট্ট চা বাগানটি যতটা সুন্দর তার পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ডাহুক নদীর তার চেয়েও সুন্দর। এক সময়ের দ্রুত প্রবাহিত নদী এখন প্রায় মৃতপ্রায়।

৬. বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট ও স্থলবন্দর

হিমালয়ের কো’লঘেঁষে বাংলাদেশের সর্বোত্তরের উপজেলা তেঁতুলিয়া। এই উপজেলার ১নং বাংলাবান্ধা ইউনিয়নে অবস্থিত বাংলাদেশ মানচিত্রের সর্বোত্তরের স্থান বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট ও বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর। এই স্থানে মহানন্দা নদীর তীর ও ভারতের সীমান্ত সংলগ্ন প্রায় ১০ একর জমিতে ১৯৯৭ সালে নির্মিত হয় বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর, নেপালের সাথে বাংলাদেশের পণ্য বিনিময়ও সম্পাদিত হয় বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্টে। সম্প্রতি এ বন্দরের মাধ্যমে ভারতের সাথে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

৭. মহারাজার দীঘি

মহারাজা দীঘি পঞ্চগড় জেলা থেকে মাত্র ১৫ কিলোমিটার দূরে ওমরখানা ইউনিয়নে অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক পুকুর। এটা বিশ্বাস করা হয় যে মহারাজা পৃথু  তার রাজত্বের সময়  অন্তরগড় নামক ১৫০০ বছরের পুরনো ঐতিহাসিক রাজ্যে দীঘি খনন করেছিলেন।

আরও পড়ুন  আয়তনে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় এবং ছোট ১০ টি দেশ।

৮. বদেশ্বরী মহাপীঠ মন্দির

বদেশ্বরী মন্দির বাংলাদেশের রংপুর বিভাগে অবস্থিত একটি প্রাচীন স্থাপনা। এটি মূলত পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার বড়শশী ইউনিয়নের অন্তর্গত একটি প্রাচীন মন্দির ও বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর এর তালিকাভুক্ত একটি সংরক্ষিত প্রত্নতত্ত্ব। এ মন্দিরকে পাল আমলে নির্মিত বলে মনে করা হয়।

৯. তেতুলিয়ার ডাক বাংলো

পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলা সদরে একটি ঐতিহাসিক ডাক বাংলো আছে। এর নির্মাণ কৌশল অনেকটা ভিক্টোরিয়ান ধাঁচের। জানা যায় কুচবিহারের রাজা এটি নির্মাণ করেছিলেন। ডাক বাংলোটি জেলা পরিষদ কর্তৃক পরিচালিত। এর পাশাপাশি তেঁতুলিয়া উপজেলা পরিষদ কর্তৃক নির্মিত একটি পিকনিক কর্ণার রয়েছে। উক্ত স্থান দুইটি পাশাপাশি অবস্থিত হওয়ায় সৌন্দর্য বর্ধনের বেশী ভূমিকা পালন করছে।

১০. বারো আউলিয়ার মাজার, পঞ্চগড়

বারো আউলিয়ার মাজার পঞ্চগড় জেলার আটোয়ারী উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের বারো আউলিয়া মৌজায় অবস্থিত। বারো আউলিয়া মৌজার মোট আয়তন ৪৭.৭৩ একর। এখানে একটি মাদ্রাসা ও একটি এতিম খানা রয়েছে। জানা যায় যে ১২ জন মুসলিম সাধু মধ্যপ্রাচ্য থেকে এসে ধর্মপ্রচার শুরু করে এবং তারা মারা গেলে তাদের এখানে কবর দেওয়া হয়। এ কারণে স্থানটির নামকরণ করা হয় বারো আউলিয়া মাজার।

আরো পড়ুন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top