প্রায়ই এসি বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের খবর পাওয়া যায়। আর এর বেশিরভাগই এসির কারণেই হচ্ছে বলে জানা যায়। সময়মত মেইনটেনেন্স ও সঠিক ব্যবহার না করায় এসব দূর্ঘটনা ঘটছে। আসুন জেনে নেই কেন এসির বিস্ফোরণ ঘটে, এর থেকে প্রতিকারের উপায়ই বা কি-
১. কখনে কম্প্রেসারের ভেতরে জ্যাম লেগে থাকে, গ্যাস লিক হয়ে যায়। এই জ্যাম আর লিক সময়মতো সার্ভিসিং করাতে না পারলে ঘটতে পারে বিস্ফোরণ। এছাড়া এসি’র ফিল্টার নিয়মিত পরিষ্কার না করলেও ঘটতে পারে দুর্ঘটনা।
২. কোনো কারণে এসির প্রেসার বেড়ে গেলে কম্প্রেসার বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। কখনো আবার দাহ্য গ্যাসের কারণেও এসি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটতে পারে।
৩. বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বৈদ্যুতিক হাই ভোল্টেজের কারণে এসব ঘটনা ঘটে। হাইভোল্টেজের কারণে যেকোনো ইলেক্ট্রিক মেশিনের ওপর চাপ সৃষ্টি হলেই সেখানে সমস্যা হয় এবং একসময় বিস্ফোরণের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়।
৪. বজ্রপাতের কারণেও অনেক সময় এসি বিস্ফোরণ ঘটতে পারে।
এসি’র বিস্ফোরণজনিত দুর্ঘটনা এড়াতে হলে-
১. দিনরাত ২৪ ঘণ্টা এসি চালু রাখবেন না। দীর্ঘক্ষণ ধরে এসি চললে যন্ত্রপাতি অতিরিক্ত গরম হয়ে আগুন ধরে যেতে পারে। বেশ কিছুক্ষণ চালিয়ে অন্তত এক-দুই ঘণ্টা এসিকে বিশ্রাম দিন।
২. বছরে অন্তত একবার প্রফেশনাল টেকনিশিয়ান দ্বারা এসি চেকআপ করান। কারণ মেকানিক্যাল বা ইলেকট্রিক্যাল ফল্টের কারণে যেকোনো সময়ে আগুন ধরে যেতে পারে আপনার এসি থেকে। তাই টেকনিশিয়ান দ্বারা চেক করিয়ে রাখুন আপনার এসির কানেকশনে কোনো ত্রুটি রয়েছে কিনা।
৩. ফিল্টার পরিষ্কার রাখতে হবে। খেয়াল রাখবেন যে এসির ভেতর কিছু যেন জমাট বেঁধে না থাকে। আপনার এয়ার কন্ডিশনার এর এয়ার ফিল্টার নিয়মিত পরিষ্কার করুন বা যদি আপনার পুনঃব্যবহারযোগ্য ফিল্টার থাকে তাহলে একটি নির্দিষ্ট সময় পর তা পরিবর্তন করুন।
৪. ওয়্যারিং পর্যবেক্ষণ করুন নিয়মিত। এয়ার কন্ডিশনারে কাজ করার আগে অবশ্যই বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে নিন। এটি আপনার বাড়ির প্রধান ব্রেকার প্যানেল থেকে করা যাবে। প্রথমে আপনার কেন্দ্রীভূত ইউনিট এ অ্যাক্সেস প্যানেলটি সরান এবং ওভারহিটিং এর কোনো লক্ষণ আছে কিনা দেখুন। এছাড়াও তারের ওপর গলিত আস্তরণ, কালো বা জ্বলন্ত কিছু খুঁজে পেলে সাথে সাথে বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিন। ভেতরের সবগুলো তারের সংযোগ টাইট করে লাগানো কিনা দেখে নিন।
৫. বৈদ্যুতিক হাই ভোল্টেজ এড়ানোর জন্য ভবনগুলোর ছাদে বজ্রনিরোধক ব্যবস্থা রাখুন।
৬. নকল এসি ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। অনেক সময় নিম্নমানের ও মানহীন যন্ত্রাংশ এসব নকল এসিতে ব্যবহার করে বিখ্যাত কোন এসির নাম ও লোগো দিয়ে বাজারে বিক্রি করা হয়। তাই এসি কেনার সময় অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বণ করতে হবে।
৭. গরমের শুরুতে এসির বৈদ্যুতিক সংযোগ, সকেট, ফিল্টার—এসবের অবস্থাটা ঠিকমতো পরীক্ষা করতে হবে। অনেক দিন বন্ধ থাকার পর চালু করতে গেলে অবশ্যই এসির সংযোগ তার পরীক্ষা করে নেওয়া উচিত। অনেক দিন বন্ধ থাকার কারণে চালু করলে এসির ভেতরে শব্দ হতে থাকে।