শুক্রবার এর আমল বা জুম্মা নামাজের আমল অনেক। অনেক হাদিসে বলা হয়েছে_ যে ব্যক্তি পর পর তিনটি জুম্মা নামাজ বাদ দিল সে কাফিরদের অন্তর্ভুক্ত হল। এই হাদিস থেকেই স্পষ্ট জুম্মা নামাজ এর গুরুত্ব ও ফজিলত। মহানবী (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি জুম্মার নামাজ পড়ার উদ্দেশে মসজিদে সবার আগে যাবে, তার জন্য মহান আল্লাহ্ তায়ালা একটি কবুল হজের সওয়াব দান করবেন। জুম্মার নামাজ সম্পর্কে আরও অনেক হাদিস রয়েছে যেখানে এর গুরুত্ব এবং ফজিলত বর্ণনা করা হয়েছে।
আমরা অনেকেই জুম্মার নামাজ এর ফজিলত জানি কিন্তু জুম্মার নামাজের নিয়ত সঠিক জানি না। অনেকে জানলেও ভুল উচ্চারণের ফলে অর্থ ভুল হয়ে যায়। চলুন তাহলে জুম্মার নামাজের সহি নিয়ত এবং তার বাংলা উচ্চারণ অর্থ সহ জেনে নেওয়া যাক।
Table of Contents
Toggleজুম্মার নামাজের নিয়ত, বাংলা উচ্চারণ অর্থসহ
নামাজ সঠিক হওয়ার অন্যতম শর্ত হল নামাজের নিয়ত সঠিক হওয়া। নিয়ত যদি ভুল হয় তাহলে নামাজ সঠিক হবে না। তাহলে, জুম্মার নামাজের নিয়ত জেনে নেওয়া যাক_
জুম্মার নামাজের নিয়ত আরবি_
نَوَايْتُ اَنْ اُسْقِطََ عَنْ ذِمَّتِىْ فَرْضُ الظُّهْرِ بِاَدَاءِ رَكْعَتَىْ صَلَوةِ الْجُمُعَةِِ فَرْضُ اللَّهِ تَعَالَى مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيْفَةِ اَللَّهُ اَكْبَرُ
জুম্মার নামাজের নিয়ত বাংলায়
বাংলা উচ্চারণঃ “নাওয়াইতু আন্ উসকিতা আন্ জিম্মাতী ফারদুজ্জহ্রি, বি-আদায়ি রাকয়াতাই ছালাতিল্ জুমুয়াতি, ফারজুল্লাহি তায়ালা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল্ ক্বাবাতিশ্ শারীফাতি আল্লাহু আক্বার।”
অর্থ (বাংলা নিয়ত) : আমার উপর জুহরের ফরজ নামাজ আদায়ের যে দায়িত্ব রয়েছে, আমি কেবলামুখী হয়ে, জুম্মার দুই রাকায়াত ফরজ নামাজ আদায়ের মাধ্যমে তা পালনের নিয়ত করলাম। আল্লাহু আকবর।
জুম্মার নামাজের ফজিলত
১) গুনাহ মাফের দিন : রাসূলুল্লাহ সা: বলেন, যে ব্যক্তি জুম্মার দিন গোসল করে উত্তম পোশাক পরিধান করবে এবং সুগন্ধি ব্যবহার করবে, যদি তার নিকট থাকে। তারপর জুম্মার নামাজে আসে এবং অন্য মুসল্লিদের গায়ের ওপর দিয়ে টপকে সামনের দিকে না যায়। নির্ধারিত নামাজ আদায় করে। তারপর ইমাম খুতবার জন্য বের হওয়ার পর থেকে সালাম পর্যন্ত চুপ করে থাকে। তাহলে তার এই আমল পূর্ববর্তী জুম্মার দিন থেকে পরের জুম্মা পর্যন্ত সব সগিরা গুনাহের জন্য কাফ্ফারা হবে (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৪৩)।
২) সপ্তাহের সেরা দিন : রাসূলুল্লাহ সা: বলেন, জুম্মার দিন দিবসসমূহের মধ্যে শ্রেষ্ঠ এবং তা আল্লাহর নিকট অধিক সম্মানিত (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১০৮৪)।
৩) জুম্মার দিন শুধু এই উম্মতের বৈশিষ্ট্য : হজরত আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত, নবীজী সা: বলেন, আমাদের পূর্ববর্তী উম্মতকে জুম্মার দিন সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা অজ্ঞ রেখেছেন। ইহুদিদের ফজিলতপূর্ণ দিবস ছিল শনিবার। খ্রিষ্টানদের ছিল রোববার। অতঃপর আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে দুনিয়ায় পাঠালেন এবং জুম্মার দিনের ফজিলত দান করলেন। সিরিয়ালে শনি ও রোববারকে শুক্রবারের পরে রাখলেন। দুনিয়ার এই সিরিয়ালের মতো কেয়ামতের দিনও ইহুদি খ্রিষ্টানরা মুসলমানদের পরে থাকবে। আমরা উম্মত হিসেবে সবার শেষে এলেও কেয়ামতের দিন সব সৃষ্টির আগে থাকব (মুসলিম-১৪৭৩)।
8) জুম্মার দিন দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ দিন : হজরত আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত, নবীজী সা: বলেছেন, পৃথিবীর যত দিন সূর্য উদিত হবে তার মধ্যে শ্রেষ্ঠ দিন হলো শুক্রবার। এ দিনে আদম আ:-কে সৃষ্টি করা হয়েছে এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছে। এ দিনেই তাঁকে জান্নাত থেকে বের করা হয়েছিল। সর্বশেষ কেয়ামত সংঘটিত হবে শুক্রবার দিনে (মুসলিম-৮৫৪)।
1 thought on “জুম্মার নামাজের নিয়ত বাংলা উচ্চারণ ও ফজিলত”
Pingback: এক নজরে জুম্মা মুবারক স্ট্যাটাস বাংলা - নিউজরুমস২৪