Search
Close this search box.

সজনে পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা

সজনে পাততার উপকারিতা

সজনে পাতার বৈজ্ঞানিক নাম হচ্ছে (Moringa oleifera)। এটি বৃক্ষ জাতীয় একটি গাছ। দুই থেকে তিন প্রকারের সজনে পাওয়া যায়। এছাড়াও বারো মাসি জাতের সজনে রয়েছে যা সারা বছর ধরেই ফলন দেয়। পুষ্টিবিদরা সজনেকে বৃক্ষ বলে অভিহিত করেছেন। কারণ এই সজনে পাতায় রয়েছে আট রকমের অ্যামাইনো এসিডসহ ৩৮ শতাংশ আমিষ যা উদ্ভিদেই নেই। সজনের সবজির চেয়ে এর পাতার উপকারী বেশি। সজনে পাতাকে বলা হয় উত্তম বন্ধু। আজ আমরা সজনে পাতার উপকারিতা নিয়ে আলোচনা করব।

সজনে পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা

এখন আমরা সজনে পাতার পুষ্টি ও গুনাগুন সম্পর্কে আলোচনা করব –

পুষ্টির দিক দিয়ে বিজ্ঞানীরা সজিনাকে ‘পুষ্টির ডিনামাইট’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। সজনে পাতার মাধ্যমে ঔষধি গুন ও পুষ্টি সারা বছরই পাওয়া যায়। সজনে গাছকে মাল্টিভিটামিন বৃক্ষ বলা হয়। সজনে পাতার প্রতি ১০০ গ্রামে রয়েছে ৮৫. ২ গ্রাম পানি, ২.৯ গ্রাম আমিষ, ৪.৮ গ্রাম খাদ্য আঁশ, ৫.১ গ্রাম শর্করা, ০.২ গ্রাম চর্বি, জিংক ০.১৬ মি. গ্রাম, ২৬ মি. গ্রাম ভিটামিন, ২৪ মি. গ্রাম ক্যালসিয়াম, ০.২ মি.গ্রাম আয়রন, ০.০৪ মি.গ্রাম ভিটা-বি১, ০.০৪ মি.গ্রাম ভিটা-বি২,৬৯.৯ মি.গ্রাম ভিটামিন-সি, ৪৩ কি.ক্যাল খাদ্য শক্তি। (সুত্র: বারটান, ২০১৬)

সজনে পাতার উপকারিতা সবটা জুড়েই রয়েছে। বিজ্ঞানীরা মনে করে সজনে পাতা হল পুষ্টি গুনে পরিপূর্ণ। যারা নিরামিষভোজী তারা সজিনা পাতা থেকে উপকৃত হতে পারবেন। সজনে পাতাকে যদি তুলনা কজরা যায় তবে একই ওজনের সজিনা পাতাতে কমলালেবুর চেয়ে সাত গুণ বেশি ভিটামিন সি রয়েছে, ক্যালসিয়াম রয়েছে দুধের চার গুণ, আমিষ রয়েছে দুই গুন বেশি, ভিটামিন এ রয়েছে গাজরের চেয়ে চার গুণ বেশি, কলার চেয়ে তিনগুণ বেশি পটাশিয়াম রয়েছে। এছাড়াও বিজ্ঞানীরা বলেন যে সজনে পাতায় ক্যালসিয়াম রয়েছে ১২৫%, ৪২% আমিষ, ম্যাগনেসিয়াম ৬১%, ৪১% পটাশিয়াম, ৭১% লৌহ, ভিটামিন-এ ২৭২%, এবং ভিটামিন সি ২২% সহ অন্যান্য অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে।

আরও পড়ুন  বাচ্চাদের ওরাল থ্রাশ থেকে মুক্তির উপায়

মাত্র এক চামচ সজনে পাতার গুড়ার মাধ্যমে এক থেকে দুই বছর বয়সী শিশুর জন্য রয়েছে ৪০% ক্যালসিয়াম, ১৪% আমিষ, ২৩% লৌহ ও ভিটামিন-এ। একজন গর্ভবতী বা স্তন্যদাত্রী মা যদি ছয় চামচ সজনে পাতার গুড়া প্রতিদিন খায় তবে প্রয়োজনীয় সবটুকু আয়রন ও ক্যালসিয়াম তার শরীরে সরবরাহ হবে।

সজনে পাতার উপকারিতা

ভারতীয় আয়ুর্বেদিক শাস্ত্রমতে, পাতা প্রায় ৩০০ রকমের রোগবালায় হতে মানুষকে রক্ষা করে। সজনে পাতা এটি কচি সবজি হিসেবে বেশি ব্যবহৃত হয়। সজনের ফুল, ফল, শিকড়, বাকল, বীজ, পাতা এমনকি এর আঠাতেও ঔষধি গুণ রয়েছে। নিচে সজনে পাতার ঔষধি গুণ রয়েছে সেগুলো আলোচনা করা হলো –

  • সজনের শিকড়ের রস কানের ব্যথা দূর করে।
  • শরীরের কোন জায়গায় ফোড়া হলে সজনের আঠা লাগালে সেটি ভালো হয়ে যায়।
  • শরীরের কোন জায়গায় ব্যথা অনুভূত হলে বা কোন জায়গায় ফুলে গেলে সজনের শিকড়ের প্রলেপ লাগালে ফোলা ও ব্যথা সেরে যাবে।
  • গ্যাসের সমস্যা দূর করতে সজনে পাতার রস খেতে পারেন। বাচ্চাদের পেটের গ্যাস দূর করতে  সজনে পাতার রসের সঙ্গে একটু লবণ মিশিয়ে খাওয়াতে হবে।
  • জ্বর ও সর্দি দূর করার জন্য সজনে পাতার শাক খুবই উপকারী।
  • ডায়াবেটিস রোগ সারতে সজনে পাতার রস ব্যবহৃত হয়।
  • যদি কারো কোষ্ঠকাঠিন্যে সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে তিনি সজনে পাতার  রস খেতে পারেন।এটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার সাথে সাথে দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে।
  • হৃদরোগ চিকিৎসায় সজনে পাতার রস খুব উপকারি এবং রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধিতে সহায়ক।
  • মাইগ্রেন, শ্বাসকষ্ট, মাথাধরা সমস্যা দূর করতে সজমের বিকল্প নেই।
  • সজনের আঠা কপালে মালিশের মাধ্যমে মাথা ব্যথা সারে। এছাড়াও সজনের আঠা দুধের সাথে মিশিয়ে খেলেও মাথা ব্যথা ভাল হয়ে যায়।
  • হাঁপানি রোগের জন্যও সজনে দিয়ে চিকিৎসা করলে উপকার পাওয়া যায়।
  • সজনে নিয়মিত রান্না করে খেলে গেঁটে ব্যথা থেকে মুক্তি মেলে।
  • সজনে ফুল দুধের সাথে খেলে কামশক্তি বৃদ্ধি পায়

আরো পড়ুন

1 thought on “সজনে পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা”

  1. Pingback: ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ দুধের বিকল্প খাবার  - নিউজরুমস২৪

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top