Search
Close this search box.

অন্যায়ের প্রতিশোধ নাকি ধৈর্য্যধারণ, ইসলাম কী বলে?

কুরবানির ইতিহাস

ধৈর্য আল্লাহ তাআলার অন্যতম নেয়ামত। ধৈর্য ধারণকারীদের জন্য আল্লাহ তাআলা অসংখ্য নেয়ামতের ঘোষণা করেছেন।

কেউ কারো প্রতি কোনো অন্যায় করলে তার প্রতিশোধ বা বিচার আদায় করা বৈধ। তবে প্রতিশোধ বা বিচার নেয়ার মানদণ্ড নির্ধারণ করা আছে। অন্যায়ের বিচার তথা প্রতিশোধ নেয়ার বিধান দিয়েছে ইসলাম। তবে কারো ওপর জুলুমের বিচার আদায় বা প্রতিশোধ না নিয়ে ধৈর্য ধারণকেই বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।

আল্লাহ তাআলা বলেন-

‘আর যদি কাউকে তোমরা শাস্তি দাও, তবে ততখানি শাস্তি দেবে যতখানি অন্যায় তোমাদের প্রতি করা হয়েছে। আর যদি ধৈর্য ধারণ করো তাহলে তা তার জন্যেই উত্তম।’ (সুরা নহল : আয়াত ১২৬)

এ আয়াতে আল্লাহ তাআলা প্রতিশোধের কথা যেমন বলেছেন, তেমনি ধৈর্য ধারণ করার কথাও উল্লেখ করেছেন। ইসলামে উভয়টি জায়েজ এবং ধৈর্য অবলম্বন প্রতিশোধ গ্রহণ থেকে উত্তম।

প্রথমত প্রতিশোধ গ্রহণ: আল্লাহর পথে দাওয়াত দানকারীদেরকে আইনগত অধিকার দেয়া হয়েছে যে, যারা নির্যাতন চালায়, তাদের কাছ থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করা বৈধ, কিন্তু শর্ত হলো- প্রতিশোধ গ্রহণের ক্ষেত্রে নির্যাতনের সীমা অতিক্রম করা যাবে না।

যতটুকু জুলুম প্রতিপক্ষের তরফ থেকে করা হয়, প্রতিশোধ বা বিচার ততটুকুই গ্রহণ করতে হবে, বেশি হতে পারবে না।

এবিষয়ে বুখারি ও মুসলিম শরীরে আছে ‘হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহ আনহু থেকে বর্ণিত, ‘এক ইহুদি এক মেয়েকে দুই পাথরের মাঝে রেখে হত্যা করে, মৃত্যুর আগে সে মেয়ে এক ইয়াহুদির প্রতি ইঙ্গিত করে। সেই ইয়াহুদিকে নিয়ে আসা হলে সে তা (হত্যার কথা) স্বীকার করে। ফলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সে ইহুদিকে দুই পাথরের মাঝখানে বেঁধে হত্যা করার আদেশ করেন।’ (বুখারি, মুসলিম)

ওহুদের যুদ্ধে সত্তর জন সাহাবির শাহাদতবরণ এবং হজরত হামজা রাদিয়াল্লাহু আনহুকে শহিদ করার পর তার নাক-কান কাটার ঘটনায় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দারুণভাবে মর্মাহত হলেন।

আরও পড়ুন  রমজানের প্রস্তুতি নিতে হয় যেভাবে

সাহাবায়ে কেরাম বললেন, আমরা যদি তাদের ওপর জয়লাভ করি, তবে তাদেরকে দেখিয়ে দেব। তারপর মক্কা বিজয়ের দিন আসল। তখন আল্লাহ আয়াত নাজিল করলেন-

‘যদি শাস্তি দিতে চাও তবে ততটুকুই দেবে, যতটুকু তোমরা শাস্তি ভোগ করেছ। আর যদি তোমরা ধৈর্য ধারণ কর, তবে তা ধৈর্যশীলদের জন্য অনেক উত্তম (কল্যাণকর)।’

তখন এক লোক বলল, ‘আজকের পরে কুরাইশদের কেউ অবশিষ্ট থাকবে না। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘৪ জন ব্যতিত আর সবাইকে ছেড়ে দাও।’ (মুসতাদরেকে হাকেম, তিরমিজি, নাসাঈ)

ইসলামে প্রতিশোধ গ্রহণ জায়েজ তবে ধৈর্য সর্বোত্তম কল্যাণ। তবে প্রতিশোধের ক্ষেত্রে অবশ্যই জুলুমের মাত্রাকে ছাড়িয়ে যাওয়া যাবে না। এটাই ইসলামের চূড়ান্ত ঘোষণা।

সুতরাং মুসলিম উম্মাহর শাস্তি প্রদানের প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখা জরুরি। কোনোভাবেই যেন প্রতিশোধ জুলুমের মাত্রা ছাড়িয়ে না যায়। আর মাজলুম ব্যক্তির জন্য প্রতিশোধ গ্রহণের চেয়ে ধৈর্যে রয়েছে সর্বোত্তম কল্যাণ।

আরো পড়ুন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top