মাইক্রোসফট আবারও বিশ্বের সবচেয়ে দামি কোম্পানির মুকুট দখল করেছে, পেছনে ফেলেছে দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাপলকে। ২০২৫ সালের শুরুর দিকেই এই পরিবর্তনটি স্পষ্ট হয়ে ওঠে, যখন অ্যাপলের শেয়ারমূল্যে টানা পতন ও বাজারমূল্যে হ্রাস দেখা যায়।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সিএনবিসি জানিয়েছে, চলতি বছরের এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে অ্যাপলের শেয়ারমূল্য চার দিন ধরে ধারাবাহিকভাবে কমে যায়। ফলে প্রতিষ্ঠানটির বাজারমূল্য নেমে আসে ২.৫৯ ট্রিলিয়ন ডলারে, যেখানে একই সময় মাইক্রোসফটের বাজারমূল্য দাঁড়ায় ২.৬৪ ট্রিলিয়ন ডলার। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, মাইক্রোসফটের বাজারমূল্য বেড়ে হয়েছে ৩.২৩ ট্রিলিয়ন ডলার, যা অ্যাপলের ৩.০৭ ট্রিলিয়ন ডলারের চেয়ে বেশি।
বিশ্লেষকদের মতে, এই পরিবর্তনের পেছনে একাধিক অর্থনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক কারণ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত নতুন শুল্কনীতি, যেখানে শতাধিক দেশের ওপর আমদানি শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, তা বৈশ্বিক বাজারে অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে। এতে করে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ভয় তৈরি হয়েছে, যার প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছে অ্যাপলের ওপর বিশেষ করে তাদের চীনের ওপর উচ্চমাত্রায় উৎপাদন নির্ভরতার কারণে।
অন্যদিকে মাইক্রোসফট তুলনামূলকভাবে নিরাপদ অবস্থানে রয়েছে, কারণ প্রতিষ্ঠানটির প্রধান আয় উৎস হলো ক্লাউড কম্পিউটিং, এআই সলিউশন এবং এন্টারপ্রাইজ সফটওয়্যার, যেগুলোর বিশ্বব্যাপী চাহিদা অব্যাহত রয়েছে।
২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে মাইক্রোসফট আয় করেছে প্রায় ৭ হাজার কোটি ডলার যা বিশ্লেষকদের প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। এ সময়ে নিট মুনাফা ছিল ২ হাজার ৫০০ কোটি ডলার এবং শেয়ারপ্রতি আয় ৩.৪৬ ডলার। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী সত্য নাদেলা জানিয়েছেন এই প্রবৃদ্ধির পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে ক্লাউড ব্যবসা, যেখানে একা ২ হাজার ৬৮০ কোটি ডলারের আয় হয়েছে আগের বছরের তুলনায় যা ২১ শতাংশ বেশি।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের শুরুতেও মাইক্রোসফট স্বল্প সময়ের জন্য বিশ্বের শীর্ষ কোম্পানির স্থান দখল করেছিল তবে পরে অ্যাপল আবারও সেই অবস্থানে ফিরে আসে। তবে এবার পরিস্থিতি ভিন্ন অ্যাপলের উৎপাদন ব্যবস্থার ঝুঁকি এবং আন্তর্জাতিক চাপ তাদের টেকসই অবস্থানকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।