সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি মেয়ের বিদায় অনুষ্ঠানের ভাষণ ভাইরাল হয়। স্কুলের ছাত্র ছাত্রীদের বিদায়ী ভাষণ মাঝে মাঝেই আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে দেখে থাকি নানান অংগ-ভঙ্গিতে দিয়ে থাকে যার ফলে তাই হয়। বর্তমান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে কোন খবর খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। আপনিও যদি এরকম হাসির পাত্র হতে না চান তাহলে আজ থেকেই বিদায়ী ভাষণ শেখা শুরু করুন।
বিদায়ী ভাষণ কয়েক প্রকারের হলেও আজকে আমরা মূলত স্কুল বা কলেজ থেকে বিদায় নেওয়ার সময় যে ভাষণ দেওয়া হয় সেটি সম্পর্কে একটি ভাষণ তুলে ধরব। চলুন তাহলে শুরু করা যাক-
ছাত্র ছাত্রীদের বিদায়ী ভাষণ বা বক্তব্য
যদি আপনি নিজে বিদায় নেন তাহলে_
“বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম, মঞ্চে উপস্থিত প্রধান অতিথি এবং আমার শ্রদ্ধেয় সকল শিক্ষক ও আমার সামনে উপস্থিত সকল শিক্ষার্থীদের আমার পক্ষ থেকে আন্তরিক সালাম এবং শুভেচ্ছা জানাই।
দীর্ঘদিন ধরে আমরা এই প্রতিষ্ঠানে পড়েছি এবং এই প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি শিক্ষক শিক্ষিকাবৃন্দ আমাদেরকে বিভিন্ন বিষয় অত্যান্ত দক্ষতার সাথে পড়িয়েছেন তা আমরা কখনোই ভুলবো না। এজন্য আমরা আপনাদের কাছে চিরকৃতজ্ঞ। কিন্তু ইচ্ছে না থাকা সত্ত্বেও আমাদেরকে আজ অত্র প্রতিষ্ঠান থেকে বিদায় নিতে হচ্ছে। আজ শিক্ষাজীবনের একটি অধ্যায় সমাপ্ত করে পরের আরেকটি অধ্যায়ে পা রাখার উদ্দেশ্যে আমরা বিদায় নিচ্ছি।
আপনারা আমাদের জন্য দোয়া করবেন যেন ভবিষ্যতে শিক্ষাজীবনে আরো উন্নতি করে দেশ ও জাতি গঠনে ভূমিকা রাখতে পারি। এছাড়া এখানে দীর্ঘ শিক্ষাজীবনে আপনাদের অনেক শাসন-বাড়নের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে যা সাময়িক বিরক্তিকর মনে হলেও এখন এই শেষ মুহূর্তে বুঝতে পারছি এটা আমাদের জন্য কতটা দরকারি ছিলো। তাই আমাদের কোনো আচরণের যদি কোনো শিক্ষক/শিক্ষিকা কষ্ট পেতে থাকেন বা ছোট কিংবা বড় কোনো ভুল করে থাকি তাহলে আমাদেরকে ক্ষমা করবেন। সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের পক্ষ থেকে আমি বিনীতভাবে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।
যাই হোক, বিদায়ী মুহূর্তে আর বেশি কিছু বলতে চাই না, এই প্রতিষ্ঠান এবং প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষক/শিক্ষিকাবৃন্দের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আমি আমার বক্তব্য এখানেই শেষ করছি। – আসসালামু অলাইকুম।
যদি আপনার সিনিয়রদের বিদায় অনুষ্ঠান হয়_
আসসালামু অলাইকুম
অত্যন্ত দুঃখ ও ভারাক্রান্ত মন নিয়ে বলতে হচ্ছে আজ আমাদের বড় ভাইদের বিদায় অনুষ্ঠান। যদিও আমরা মনে করি এটা একটা বিদায়ের আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। কারণ মন থেকে চিরতরে বিদায় দেওয়া হয়তো সম্ভব হবে না। আমরা অনেকদিন ধরে রিদয় রাঙানো গাঁথা সূরে এই কলেজে আছি। আমরা এখানে সবাই ভাইয়ের মত ছিলাম। আপনারা আমাদের বড় ভাইয়ের মতো ছিলেন। আপনাদের অনুসরণ করে আমরা এগিয়ে গিয়েছি। আপনাদের নিকট আমরা অনেক কিছু শিখেছি।
এজন্য আমরা আপনাদের কাছে চিরকৃতজ্ঞ। কিন্তু ইচ্ছে না থাকা সত্ত্বেও আপনাদেরকে আজ এখান থেকে বিদায় নিতে হচ্ছে। বিদায় সবাইকেই নিতে হবে। মূলত আমাদের জীবনতো খুবই ছোট। এই কলেজ পরিসরটা আরও ছোট । কারণ প্রয়োজনের তাগিদে বিভিন্ন জায়গায় চলে যেতে হয়। তার পরেও আমরা অনেক দিন মিলেমিশে ছিলাম । শীতের শিশির বিন্দুর মতোই বেলা বাড়ার সাথে সাথেই তা মিলিয়ে যায়।
আমরাও খুব শিগগিরই বিদায় নিয়ে আপনাদের পিছু পিছু চলে আসব। আজ শিক্ষাজীবনের একটি অধ্যায় সমাপ্ত করে পরের আরেকটি অধ্যায়ে পা রাখার উদ্দেশ্যে আপনারা বিদায় নিচ্ছেন। আপনাদের জন্য আমাদের দোয়া ও আশির্বাদ থাকবে যেন আপনারা সাফল্যের স্বর্ণ শিখরে পদার্পণ করতে পারেন। আপনারা যেন ভবিষ্যতে শিক্ষাজীবনে আরো উন্নতি করে দেশ ও জাতি গঠনে ভূমিকা রাখতে পারেন। আমরাও আপনাদের চলা পথ ধরে এগিয়ে যেতে চাই। এছাড়া এখানে আপনাদের সাথে আমাদের আচরণ বা ব্যবহারে কোন কষ্ট পেয়ে থাকলে নিজগুনে তা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। বিদায় দিতে মন চাচ্ছে না, তবুও বিদায় দিতেই হবে ।
তাই কবির চরণে বলতে হয়,
যেতে নাহি দিব হায়,
তবু যেতে দিতে হয়,
তবু চলে যায় ।
যাই হোক, বিদায়ী মুহূর্তে আর বেশি কিছু বলতে চাই না, এই কলেজের সকল ছোট ভাইদের পক্ষ থেকে আপনাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আমি আমার বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য এখানেই শেষ করছি।
সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদও শুভেচ্ছা রইল।
সুত্রঃ উইকিপিডিয়া বাংলা