আজকের ব্যস্ত জীবনে অনিয়মের কারণে শরীরে বাসা বাঁধছে নানা রোগ। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ওষুধের তালিকা যেমন দীর্ঘ হচ্ছে, তেমনি নষ্ট হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনের গতি। কিন্তু একটি সহজ অভ্যাসই হতে পারে বহু সমস্যার সমাধান নিয়মিত যোগাসন চর্চা।
শরীরচর্চার জন্য জিমে যেতে না পারলেও, প্রতিদিন মাত্র ৩০ মিনিট সময় বের করে বাড়িতেই যোগব্যায়াম করলে শরীর ও মন দুইই থাকবে চাঙ্গা। আজ আমরা জানব একটি দারুণ কার্যকর যোগাসন কাষ্ঠ তক্ষণাসন।
কী এই কাষ্ঠ তক্ষণাসন?
‘কাষ্ঠ তক্ষণ’ অর্থাৎ কাঠ কাটা। কাঠুরেরা যেভাবে দুই হাতে কুঠার তুলে কাঠ কাটেন, সেই ভঙ্গিতেই করা হয় এই আসনটি। শুধু শারীরিক নয়, এই আসনটি মানসিক প্রশান্তি ও ভেতরে জমে থাকা নেতিবাচক আবেগ দূর করতেও দারুণভাবে কার্যকর।
কীভাবে করবেন কাষ্ঠ তক্ষণাসন?
১. ম্যাটের উপর সোজা হয়ে দাঁড়ান, পায়ের মাঝে সামান্য ফাঁক রাখুন।
২. কল্পনায় ভাবুন, আপনি দুই হাতে একটি ভারী কুঠার ধরেছেন।
৩. শ্বাস নিতে নিতে দুই হাত উপরে তুলুন, মাথার পেছন দিয়ে কিছুটা হেলান দিন।
৪. এবার মুখ দিয়ে জোরে ‘হা’ শব্দ করে, পায়ের মাঝখানে থাকা কল্পিত কাঠে কুঠার চালানোর মতো ভঙ্গি করুন।
৫. হাত নামানোর সময় হাঁটু সামান্য ভাঁজ হবে, কিন্তু পা যেন মাটি থেকে না ওঠে।
৬. এই পুরো প্রক্রিয়াটি ৫–৭ বার পুনরাবৃত্তি করুন।
উপকারিতা:
১. কোমর ও নিতম্বের পেশি সক্রিয় হয়—রক্ত সঞ্চালন বাড়ে, ব্যথা কমে।
২. কাঁধ ও পিঠের ওপরের পেশি সচল হয়—আড়ষ্ট ভাব কমে, সজীবতা আসে।
৩. মানসিক চাপ, রাগ, ভয় ও দুঃখ হ্রাস—মুখ দিয়ে ‘হা’ শব্দ করার মাধ্যমে মানসিক ভার লাঘব হয়।
৪. শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণ ও ফুসফুসের সক্ষমতা বাড়ে।
৫. সারা দিন সতেজ ও মনোযোগী থাকা যায়।
কেন করবেন এই আসনটি?
ব্যস্ততার ভিড়ে আমরা নিজের শরীর ও মনের যত্ন নিতে ভুলে যাই। কিন্তু প্রতিদিন মাত্র আধাঘণ্টা সময় নিজেকে দিলে আপনি পাবেন আরো সুস্থ, প্রাণবন্ত ও চাপমুক্ত জীবন। কাষ্ঠ তক্ষণাসন শুধু শরীর নয়, মনকেও জাগিয়ে তোলে।
শরীর যদি হয় যন্ত্র, তবে যোগব্যায়াম হলো তার রক্ষণাবেক্ষণ।