ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি অংশ নিলে মধ্যপ্রাচ্যে থাকা মার্কিন বাহিনীর ঘাঁটিগুলোকে লক্ষ্য করেই “জবাবি আঘাত” হানবে ইরান। এমন কড়া বার্তা দিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এনবিসি নিউজ-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, যুদ্ধ শুরু হলে উভয় দিকই একে অপরকে আক্রমণ করে এটাই স্বাভাবিক। আত্মরক্ষা প্রত্যেক দেশের বৈধ অধিকার।
আরাঘচি আরও ইঙ্গিত দেন, সংঘাত থামাতে প্রয়োজন মাত্র “ওয়াশিংটন থেকে তেল আবিবে একটি ফোন কল” অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্র যদি ইসরায়েলের অভিযান থামাতে চাপ দেয়, উত্তেজনা প্রশমিত হতে পারে।
সাম্প্রতিক সংঘাতের পটভূমি
-
১৩ জুন রাত: ইসরায়েল ইরানের ভূখণ্ডে বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। লক্ষ্যবস্তুতে বেশ কয়েকজন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা নিহত হন, বেসামরিক হতাহতও ঘটে।
-
২৪ ঘণ্টার মধ্যে: তেহরান পাল্টা ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন আঘাতে ইসরায়েলের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনায় হামলা চালায়।
-
এরপর থেকে দু’পক্ষই পাল্টাপাল্টি হামলা চালিয়ে যাচ্ছে, যার ফলে আরও প্রাণহানি ও অবকাঠামোর ক্ষতি হয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের অবস্থান
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এর আগে ইরানের পারমাণবিক ইস্যু কূটনৈতিক দ্বারাই সমাধান করতে চান বলে মন্তব্য করেছিলেন। তিনি ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার আগে ওয়াশিংটন তেহরানকে “সর্বোচ্চ দুই সপ্তাহ” সময় দিতে প্রস্তুত ছিল।
ইরানের বার্তা
আরাঘচির সাম্প্রতিক মন্তব্য স্পষ্ট করল,
১. যুক্তরাষ্ট্র আক্রমণে জড়ালে—ইরান সরাসরি মার্কিন ঘাঁটিকে টার্গেট করবে।
২. কূটনৈতিক পথ এখনো খোলা—কেবল যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত প্রয়োজন।
মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠায় পর্যবেক্ষকরা আশঙ্কা করছেন, সামান্য ভুল বোঝাবুঝি থেকেই বিস্তৃত সংঘাত বাঁধতে পারে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তাই উভয় পক্ষকে তিনটি জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছে:
-
অবিলম্বে হামলা স্থগিত
-
মানবিক করিডোর বজায় রাখা
-
সরাসরি কূটনৈতিক আলোচনা শুরু করা
দেখা এখন, ওয়াশিংটন এবং তেল আবিব বাস্তবেই ‘একটি ফোন কল’ দিয়ে সংঘাত থামানোর পথ বেছে নেয় কিনা, নাকি পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করে।