দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার নগররাষ্ট্র সিঙ্গাপুরে পার্লামেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। শনিবার (৩ মে) স্থানীয় সময় সকাল ৮টা থেকে একযোগে শুরু হয় ভোটগ্রহণ, যা চলবে রাত ৮টা পর্যন্ত। দেশজুড়ে ১,২৪০টি ভোটকেন্দ্রে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
এবারের নির্বাচনে ৯৭ আসনের মধ্যে ৯২টি আসনে ভোট হচ্ছে। নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হবে আগামীকাল, রোববার।
ভোটের মূল ইস্যু: ব্যয়, চাকরি ও স্বাস্থ্যসেবা
এবারের নির্বাচনে জনসাধারণের জীবনযাত্রার ব্যয়, আবাসন সংকট, চাকরি, স্বাস্থ্যসেবা এবং প্রবীণদের নিরাপত্তা—এসব ইস্যু বড় প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
প্যাপের আধিপত্য, তবে বাড়ছে চ্যালেঞ্জ
সিঙ্গাপুরের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে শাসন করে আসছে পিপল’স অ্যাকশন পার্টি (PAP)। ১৯৫৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত প্রতিটি নির্বাচনে জয় পেয়েছে দলটি। এমনকি বেশিরভাগ সময় তারা ৯০ শতাংশের বেশি আসনে জয়ী হয়েছে।
তবে ২০২০ সালের নির্বাচনে প্যাপের জনপ্রিয়তায় কিছুটা ভাটা পড়ে। সে বছর তারা মাত্র ৬০ শতাংশ আসনে জয় পায়, যেখানে বিরোধী ওয়ার্কার্স পার্টি ১০টি আসন দখল করে নেয়—যা ছিল দলটির জন্য সবচেয়ে দুর্বল পারফরম্যান্স।
চলতি নির্বাচনে প্যাপ ৪৬ শতাংশ আসনে প্রার্থী দিয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এবার হয়তো ২০২০ সালের চেয়েও কম আসনে জিতবে দলটি। ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুরের অধ্যাপক ল্যাম পেং ইর রয়টার্সকে জানান, “এইবার হয়তো প্যাপের জয় ৫৭ বা ৫৮ শতাংশে নামতে পারে।”
প্রধানমন্ত্রী লরেন্স উওংয়ের জনপ্রিয়তা যাচাই
২০২৪ সালের মে মাসে দীর্ঘদিনের প্রধানমন্ত্রী লি সিয়ান লুং পদত্যাগ করার পর দায়িত্ব নিয়েছেন লরেন্স উওং। এবারই তার নেতৃত্বে প্রথম জাতীয় নির্বাচন। ফলে এটি তার জনপ্রিয়তা ও নেতৃত্বগুণ যাচাইয়ের একটি বড় সুযোগ।
সিঙ্গাপুর গত ৬০ বছরে মাত্র ৪ জন প্রধানমন্ত্রী পেয়েছে, যারা সবাই ছিলেন প্যাপের নেতা। এর মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘসময় প্রধানমন্ত্রী ছিলেন লি কুয়ান ইউ, যিনি টানা ২৫ বছর দেশ শাসন করেছেন।
ভোটার সংখ্যা ও জনসংখ্যা
প্রায় ৭৩৬ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই শহররাষ্ট্রে জনসংখ্যা প্রায় ৬০ লাখ ৪০ হাজার, যার মধ্যে ২৭ লাখ ৫০ হাজার জন ভোটার। অর্থাৎ দেশের প্রায় অর্ধেক জনগণ এবার ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাচ্ছেন।