Search
Close this search box.

রমজান পেয়েও যে গুনাহ মাফ করাতে পারল না সে ধ্বংস হোক

ওয়াহিদ আমিম

শুরু হয়েছে রহমত, বরকত ও নাজাতের মাস। এ মাসে আল্লাহ তায়ালা এতো অধিক বান্দাকে ক্ষমা করেন যা অন্যকোনো সময় করেন না। তাই যতো এ মাসে যত বেশি সম্ভব তাওবা ইস্তিগফার করা সম্ভব—করুন। আল্লাহর কাছে রোনাজারি করে ক্ষমা চান। নিজের গুনাহ ক্ষমা করিয়ে নিন। এখনই কিন্তু মাফ পাওয়ার পরম সুযোগ, এ সুযোগ বারবার আসে না।

হয়তো ভাবছেন, রমজান তো সবেমাত্র শুরু হলো—আর কিছুদিন যাক, তারপর আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে নেয়ে নেব। একটু মনে করে দেখুন, গত রমজান ও তার আগের রমজানেও কিন্তু এমনটাই ভেবেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত রমজাম কীভাবে জীবন থেকে চলে গেছে টেরই পাননি। এবার চিন্তা করে দেখুন—পরে ক্ষমা চাওয়ার ভাবনা কিন্তু শয়তানের ধোঁকা ও নফসে আম্মারার প্রতারণা ছাড়া আর কিছু নয়। আপনি নিজের গুনাহ ক্ষমা করানোর জন্য আগামী রমজান পাবেন—তারও কিন্তু কোনো নিশ্চয়তা নেই। অতএব এ রমজানেই ক্ষমাপ্রার্থী হয়ে, সাচ্চা দিলে তাওবা আর ইস্তিগফার নিয়ে হাজির হোন প্রভুর দরবারে।

প্রতিদিন সাহরি খাওয়ার জন্য তো উঠতেই হয়। প্রতি বছর দেরি করে একেবারে শেষ সময়ে উঠেছেন, এবার না হয় আরেকটু আগে উঠুন। অজু করে তাহাজ্জুদের নিয়তে জায়নামাজে দাঁড়িয়ে পড়ুন। চার রাকাত, আট রাকাত, বার রাকাত, নিদেনপক্ষে দুই রাকাত নামাজ পড়ুন। সিজদায় গিয়ে আল্লাহকে বলুন—আল্লাহ, আমি ভুল করে ফেলেছি আমাকে মাফ করে দাও। আর কখনও গুনাহ করব না বলে আমি তোমাকে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। আর এ প্রতিশ্রুতি রক্ষা করার তুমিই আমাকে তাওফিক দাও।

নামাজ শেষেও একটু সময় নিয়ে আল্লাহর কাছে দুয়া করুন। মনে রাখবেন, নামাজের মত দুয়াও একটি ইবাদাত। আর তা ইবাদাতসমুহের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ইবাদাত। হাদিসে দুয়াজে ইবাদাতের মগজ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে।

দুয়ার সময় কান্নাকাটি করুন। কান্না না এলে কান্নার বাহানা করুন। আসমাউল হুসনার মাধ্যমে দুয়া করুন। দুয়ার সময় অবশ্যই এ বিশ্বাস রাখবেন—আপনার দুয়া নিশ্চিত কবুল হচ্ছে। যে দুয়া কবুলের ব্যাপারে আপনার নিজের বিশ্বাস ও আস্থা থাকে না, সে দুয়া কিন্তু আল্লাহর কাছে কবুল হয় না।

আরও পড়ুন  স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসা : ইসলাম কী বলে

অতএব রমজানের রহমতের দিন ও রাতে যত বেশি ক্ষমা প্রার্থনা করে নিজের গুনাহ মাফ করিয়ে নিন। মনে রাখবেন, যারা রমজান মাসকে গুরুত্বের সাথে নেয় না এবং নিজের গুনাহ মাফ করাতেও ব্যর্থ হয়—তাদের প্রতি আল্লাহ অসন্তুষ্ট হোন।

কাব বিন আজরাহ রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, একদিন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবিদের বললেন, তোমরা সবাই মিম্বরের কাছে এসে বসো। সবাই কাছাকাছি চলে এলে নবিজি মিম্বরে আরোহন করলেন। প্রথম সিড়িতে পা রাখার সময় তিনি বললেন আমিন। দ্বিতীয় সিঁড়িতে পা রাখার সময় বললেন আমিন এবং তৃতীয় সিঁড়িতে পা রাখার সময়ও বললেন আমিন।

এরপর নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খুতবা দিলেন। খুতবা শেষে কৌতুহলী সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞেস করলেন হে আল্লাহর রাসূল, আজ আপনাকে এমন কিছু করতে দেখেছি যা আগে কখনও দেখিনি। নবিজি জবাবে বললেন, আমি প্রথম সিঁড়িতে পা রাখার সময় জিবরাঈল আলাইহিসসালাম এসে বললেন, যে ব্যক্তি রমজান মাস পেল অথচ নিজের গুনাহ মাফ করাতে পারল না সে ধ্বংস হোক। আমি বললাম আমিন।

দ্বিতীয় সিঁড়িতে পা রাখার সময় জিবরাঈল আলাইহিসসালাম বললেন, যার সম্মুখে আপনার নাম পেশ করা হলো অথচ সে আপনার প্রতি দরুদ পড়ল না, সে—ও ধ্বংস হোক। আমি বললাম আমিন।

তৃতীয় সিঁড়িতে পা রাখার সময় জিবরাঈল আলাইহিসসালাম বললেন, যে ব্যক্তি নিজ পিতামাতার কাউকে বৃদ্ধ অবস্থায় পেল অথচ নিজের গুনাহ মাফ করাতে পারল না, সে—ও ধ্বংস হোক। আমি বললাম আমিন।  সুনানু বায়হাকি: ১৫৭২

জিবরাঈল আলাইহিসসালাম যে দুয়া করছেন, আর যখন তাতে আমিন বলেছেন সে দুয়া যে আল্লাহর কাছে নিশ্চিত কবুল হয়েছে এতে কোন সন্দেহ নেই। অতএব, রমজান পেয়েও যদি আমরা নিজের গুনাহ মাফ করাতে না পারি—তাহলে জেনে রাখুন, আপনার আমার জীবনে পরিণতি ধ্বংস ছাড়া আর কিছু নয়।

আরও পড়ুন  কারবালার সঠিক ঘটনা pdf পড়তে বইটি ডাউনলোড করুন

 

আরো পড়ুন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top