আধুনিক বাংলা বানানের ৫টি নিয়মঃ আমরা অনেক সময়ই সঠিক বানান অনুযায়ী উচ্চারণ করি না। বাংলা লিপিতে তিনটে ‘শ’ ( শ, ষ, স ) থাকা সত্ত্বেও আমরা উচ্চারণ করি ‘তালব্য শ’। আবার দুটো ‘ন’ ( ন, ণ ) কে উচ্চারণ করি ‘দন্ত্য ন’ হিসেবে। কিন্তু লেখার সময় কখন ‘মূর্ধন্য ‘ষ’ হবে এবং কখন ‘মূর্ধন্য ‘ণ’ হবে , তাই জানার জন্যে বাংলা ব্যকরণের থেকে ‘ণত্ব’ বিধান ও ‘ষত্ব’ বিধান পড়তে হবে। আমি এখানে অল্প কিছু নিয়ম লিখছি। সংস্কৃত থেকে যেসব শব্দ বাংলায় প্রবেশ করেছে সে সব শব্দে যদি র, ঋ রেফ, রফলা থাকে এবং পরবর্তী বর্ণ যদি ‘ ‘স’ হয় তবে সেই ‘স’ অবশ্যই ‘ষ’ হবে। উদাহরণ হিসেবে ‘কৃষ্ণ’ শব্দের ‘ঋ’ এর পরবর্তী বর্ণ মূর্ধ্যন্য ‘ষ’। আবার ‘র, ঋ, রফলা বা রেফ’ এর পরবর্তী বর্ণে যদি ‘ন’ থাকে তা ‘ণ’ হয়ে যাবে। যেমন, উদাহরণ, কারণ ইত্যাদি। এতো গেল ‘ণ’ ও ‘ষ’ এর বানান।
কোনো কোনো ক্ষেত্রে সন্ধি বিচ্ছেদ করে সঠিকভাবে বানান লেখা যেতে পারে। যেমন ‘উজ্জ্বল’ শব্দটির সন্ধি বিচ্ছেদ করলে হয় উদ্ + জ্বল। ‘নমস্কার’ শব্দকে সন্ধি বিচ্ছেদ করলে হয় নমঃ + কার।
বাংলা উচ্চারণ করার সময় আমরা প্রায়ই ‘অ’ এর উচ্চারণ ‘ও’ করে থাকি। আজকাল তাই ‘কলকাতা’ কে ‘কোলকাতা লেখা হয়। কিন্তু সবসময় ‘অ’ কে ‘ও’ লেখা চলবে না। ‘অরুণ’ কে ‘ওরুণ’ লিখলে বানান ভুল হবে। তাই অর্থ জেনে বানান শিখতে হবে।
আমরা যদি আমাদের আসেপাসের অন্য কোনো একটি ভাষার সাথে তুলনা করে বানান শিখি তাহলে বানান ভুল হওয়ার সম্ভবনা কমে যায়। আমি এখানে হিন্দির সাথে তুলনা করে লিখছি। হিন্দিতে দূধ ( ঊ ), বাংলায় দুধ( উ )।
আধুনিক বাংলা বানানের ৫টি নিয়ম
১.সকল অ-তৎসম শব্দেই কেবল হ্রস্ব- স্বর অর্থাৎ “ই-কার” এবং “উ-কার” ব্যাবহার করা হয়। যেমনঃ বাড়ি, গাড়ি, শাড়ি ইত্যাদি। স্ত্রীবাচক কিংবা জাতিবাচক শব্দেও এই নিয়ম প্রযোজ্য। যেমনঃ নানি, চাচি, ইরানি ইত্যাদি।
২.অ-তৎসম শব্দের বানানে “ণ “-র প্রয়োগ হবে না। যেমনঃ কর্নেল, মাউন্ট, হর্ন ইত্যাদি।
৩.অ-তৎসম শব্দের বানানে কখনই “ষ” -র ব্যাবহার হবে না।যেমনঃ স্টোভ, স্টেশন, মাস্টার ইত্যাদি।
৪.রেফের পর বেঞ্জনবর্ণ এর দ্বিত্ব বর্জিত হবে। যেমনঃ কর্ম, ধর্ম, মর্ম ইত্যাদি।
৫.পদান্তের বিসর্গ বর্জিত হবে।যেমনঃ মূলত, কার্যত, সাধারনত ইত্যাদি।